Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ছড়ায়-ছবিতে চলছে ই-প্রচার

শুধু পাড়ার দেওয়াল নয়, ফেসবুকের দেওয়ালেও চলছে জমজমাট পুরভোটের প্রচার। ভোট দেওয়ার আহ্বানের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলছে রাজনীতির আলোচনা। দেওয়া হচ্ছে প্রতিরোধের বার্তাও। তৃণমূল-শিবির লিখছে, ‘হাতে নয়, কাস্তেতে নয়, ভোট নয় পদ্মফুলে/মা-বোনেরা জোট বেঁধেছে, সব ভোট তৃণমূলে’। বাম-শিবিরের পাল্টা, ‘মারবে মারো, লড়াই তবু চলবে/রক্ত ঝরুক, পাল্টা আগুন জ্বলবে’। পিছিয়ে নেই বিজেপিও।

ফেসবুকে বামেদের প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

ফেসবুকে বামেদের প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৮
Share: Save:

শুধু পাড়ার দেওয়াল নয়, ফেসবুকের দেওয়ালেও চলছে জমজমাট পুরভোটের প্রচার। ভোট দেওয়ার আহ্বানের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলছে রাজনীতির আলোচনা। দেওয়া হচ্ছে প্রতিরোধের বার্তাও।

তৃণমূল-শিবির লিখছে, ‘হাতে নয়, কাস্তেতে নয়, ভোট নয় পদ্মফুলে/মা-বোনেরা জোট বেঁধেছে, সব ভোট তৃণমূলে’। বাম-শিবিরের পাল্টা, ‘মারবে মারো, লড়াই তবু চলবে/রক্ত ঝরুক, পাল্টা আগুন জ্বলবে’। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। গেরুয়া-শিবিরের লোকজন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে লিখছেন, ‘মা নিয়েছেন মাটি, মানুষ মরে ভূত/ভাইয়েরা সব কোটিপতি, রানির রাজ্যে লুঠ’।

একটা সময় ছিল যখন ছড়া-ছবি-কার্টুনে দেওয়াল প্রচার জমে যেত। দিন বদলেছে। বদলেছে প্রচার কৌশল। নতুন প্রজন্মের চোখ এখন আটকে থাকে স্মার্টফোনের স্ক্রিনে। প্রযুক্তির এই দুনিয়ায় ই-প্রচার যে অপরিহার্য তা মানছে সব দলই। এতদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র-যুবরাই প্রধানত ‘ই-প্রচার’ চালাতেন। এখন প্রবীণ নেতারাও ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলছেন। মাস কয়েক আগেই ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য তথা রেলশহরের বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে। রবিবাবু বলছিলেন, ‘‘এটা ঠিক, এই সাইট আজকের দিনে প্রচারের একটা সক্রিয় মাধ্যম। এখনও ততটা স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠতে পারিনি। ধীরে ধীরে শিখছি।’’ সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণাও মাস কয়েক আগেই ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। সন্তোষবাবু বলেন, “দলের ছাত্র-যুবরাই ই-প্রচার সারছেন। আমি ধীরে ধীরে শিখছি।’’

সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য দলের তরফে বিশেষ বাহিনী গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়েছে সিপিএম। পশ্চিম মেদিনীপুরে দলের একটি ‘টিম’ও রয়েছে। ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ, এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডারা এ ক্ষেত্রে বেশ সক্রিয়। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। দলের নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক, বাবলু বরম, প্রেমচাঁদ ঝাঁ-রা ফেসবুকে সক্রিয়। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘নতুন প্রজন্ম কম্পিউটার বা মোবাইলে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ। অনেকে ফেসবুকে বেশি সময়ও দেন। তাই প্রচারের ক্ষেত্রেও আমরা ফেসবুকের দেওয়ালে নজর রাখছি।’’ তৃণমূলের বহু নেতা-কর্মীও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রচার চালাচ্ছেন। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলছেন, ‘‘মূলত দলের ছাত্র- যুবরাই এই প্রচার সারছেন।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬টি পুরসভায় ভোট আগামী ২৫ এপ্রিল। ফেসবুকের দেওয়ালে শেষ মুহূর্তের প্রচার জমে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরাই নিজেদের বক্তব্য, আবেদন, মতামত তুলে ধরছেন। ছড়া-ছবি-কার্টুনও থাকছে। দুর্নীতিমুক্ত, স্থায়ী পুরবোর্ড গড়তে দলের প্রার্থীদের জয়ী করার আবেদন জানাচ্ছেন সকলেই। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “সাধারণ দেওয়ালে লেখার কত বিধি-নিষেধ। তার চেয়ে ফেসবুকের দেওয়ালে লেখা অনেক সহজ! এখানে জোর করে মুছে দেওয়ারও ব্যাপার নেই!” বিজেপির এক যুব নেতা বলেন, ‘‘আমার বন্ধুদের প্রায় সকলেই ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সাইটে স্বাধীন ভাবে মতপ্রকাশ করা যায়। তৃণমূল অন্তত দাদাগিরি করতে পারে না!’’ তাই হাত খুলেই লেখা চলছে ফেসবুকে। বামেরা লিখছে, ‘নিজের বাঁশ নিজে নিন, তৃণমূলকে ভোট দিন!’ জবাব দিচ্ছে তৃণমূলও। লেখা হচ্ছে, ‘পদ্ম কবে শুকিয়ে গেছে, মরচে ধরা কাস্তে, তৃণমূলকে ভোটটা দিয়ে, মানুষ চাইছে বাঁচতে’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE