Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কন্যাশ্রীর গ্রন্থাগার বেলিয়াবেড়ায়

কিশোরী বয়সেই পড়াশোনায় দাঁড়ি টেনে বিয়ে আর তারপর সংসারের জাঁতাকলে দিনযাপন। জঙ্গলমহলের বহু মেয়ের জীবনই এ আবর্তে থমকে যায়। ইচ্ছে আর যোগ্যতা থাকলেও সুযোগ মেলে না উচ্চশিক্ষার।

সাহায্যে: এখানেই হবে কন্যাশ্রী গ্রন্থাগার। নিজস্ব চিত্র

সাহায্যে: এখানেই হবে কন্যাশ্রী গ্রন্থাগার। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

কিশোরী বয়সেই পড়াশোনায় দাঁড়ি টেনে বিয়ে আর তারপর সংসারের জাঁতাকলে দিনযাপন। জঙ্গলমহলের বহু মেয়ের জীবনই এ আবর্তে থমকে যায়। ইচ্ছে আর যোগ্যতা থাকলেও সুযোগ মেলে না উচ্চশিক্ষার। এই চেনা ছবি বদলাতেই কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এ বার তৈরি হচ্ছে কন্যাশ্রী গ্রন্থাগারও।

সদ্য আত্মপ্রকাশ করা ঝাড়গ্রাম জেলার কন্যাশ্রী গ্রন্থাগারটি হচ্ছে বেলিয়াবেড়ায়। বেলিয়াবেড়া ব্লকসদরে কন্যাশ্রী মঞ্চ লাগোয়া ভবনে এই গ্রন্থাগার চালু হওয়ার কথা আগামী মাসে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় থাকা ছাত্রীরা এই গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে পারবে। সেখানে থাকবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই, সহায়ক বই, সেই সঙ্গে গল্প, ভ্রমণ, কবিতা-সহ নানা স্বাদের বইও। পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন পাক্ষিক ও মাসিক কিশোর পত্রপত্রিকা ও সাময়িকপত্র থাকবে। শুধু বেলিয়াবেড়া ব্লক নয়, গোটা ঝাড়গ্রাম জেলার যে কোনও কন্যাশ্রী পড়ুয়াই এই গ্রন্থাগারে বই পড়ার সুযোগ পাবে। বেলিয়াবেড়ার বিডিও কৌশিক ঘোষ বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকার কন্যাশ্রীদের পড়াশোনার মানোন্নয়ন এবং সাধারণ জ্ঞান বাড়াতেই এই উদ্যোগ। আগামী দিনে কন্যাশ্রীদের জন্য জিমন্যাসিয়াম তৈরির ভাবনাচিন্তাও রয়েছে।”

প্রশাসনের এই উদ্যোগে খুশি ছাত্রীরা। বেলিয়াবেড়ার স্কুলপড়ুয়া সরোজিনী কিস্কু, নমিতা নাইক, হেঁদেরিমিল মাণ্ডিরা বলছিল, “হাতের কাছে এত সব বই পড়ার সুযোগ মিললে আমাদের খুব উপকার হবে।”

বেলিয়াবেড়ায় পুরনো কমিউনিটি হল সংস্কার করে গত বছর গড়ে তোলা হয়েছে কন্যাশ্রী মঞ্চ। ওই মঞ্চে এখন জেলার বিভিন্ন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশাসনিক সভা-অনুষ্ঠানও হয়। কন্যাশ্রীদের উৎসর্গ করা ওই মঞ্চ লাগোয়া ভবনেই এ বার গ্রন্থাগার চালু করা হচ্ছে। সাক্ষরতা প্রকল্প এবং জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যানের টাকায় এই গ্রন্থাগারের জন্য বই, আলমারি, চেয়ার-টেবিল কেনা হবে। বেলিয়াবেড়া পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশুকল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ শর্বরী অধিকারী বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু হওয়ার পরে অবশ্য নাবালিকা বিয়ে নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। মেয়েদের মধ্যে স্কুলছুটের হারও কমেছে।’’ এই গ্রন্থাগার এই প্রক্রিয়ায় বিশেষ সহায়ক হবে বলেই প্রশাসনের আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Library Kanyashree Prakalpa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE