Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছেলেধরা ভেবে মারধরের নালিশ বেলদায়

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গ্রামের কয়েকজন ছেলেধরা বলে চেঁচিয়ে উঠতেই আমরা তাকিয়ে দেখি ওই যুবক ছুটে পালাচ্ছে। আমাদের সন্দেহ হওয়ায় ওঁকে পাকড়াও করি। কয়েকজন ওঁকে চড় মারতে মারতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। পুলিশ ঠিক সময়ে না এলে বিপদ হয়ে যেত।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৭ ১৯:০০
Share: Save:

গুজবে কান দেওয়ার আবেদন জানিয়ে প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। তারপরেও যে সচেতনতা ফেরেনি, ছেলেধরা সন্দেহে বেলদা থানা এলাকার বনমালীপুর গ্রামে এক যুবককে মারধরের ঘটনাই তার প্রমাণ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে বেলদার ধান্যশ্রী গ্রামের বাসিন্দা কেনারাম সরেনের বাড়িতে আসেন তাঁর এক আত্মীয় রতন সরেন। রতনবাবু মোহনপুরের বাসিন্দা। বুধবার সকালে ঘুরতে বেরিয়ে রতনবাবু বেলদা থানার তুতরাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের বনমালীপুর গ্রামে
চলে আসেন।

অভিযোগ, অপরিচিত এক যুবককে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে দেখে ছেলেধরা বলে চেঁচিয়ে ওঠেন এলাকার বাসিন্দাদের কয়েকজন। ঘটনা আঁচ করে ছুটতে শুরু করেন রতনবাবু। তাতে স্থানীয়দের সন্দেহ আরও বাড়ে। এরপরে স্থানীয়রা ধাওয়া করে রতনবাবুকে ধরে ফেলে। তাঁকে আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে রতনবাবুকে উদ্ধার করে থানায়
নিয়ে যায়।

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গ্রামের কয়েকজন ছেলেধরা বলে চেঁচিয়ে উঠতেই আমরা তাকিয়ে দেখি ওই যুবক ছুটে পালাচ্ছে। আমাদের সন্দেহ হওয়ায় ওঁকে পাকড়াও করি। কয়েকজন ওঁকে চড় মারতে মারতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। পুলিশ ঠিক সময়ে না এলে বিপদ হয়ে যেত।”

পুলিশ ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, তিনি মোহনপুরের বাসিন্দা। বেলদা থানা এলাকার ধান্যশ্রী গ্রামে তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। পরে ওই যুবককে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ ক্ষেত্রে কোনও অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় গ্রামবাসীদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে দাবি বেলদা থানার পুলিশের।

আগে ঝাড়গ্রাম, চন্দ্রকোনায় ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের অভিযোগ ওঠে। খড়্গপুর গ্রামীণের চকমকরামপুর ও কেশিয়াড়ির খাজরা অঞ্চলেও একই ঘটনা ঘটে। ছেলেধরা সন্দেহে মারধর বন্ধ করতে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য মাইকের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় প্রচার শুরু করে পুলিশ। পাশাপাশি স্যোশাল সাইটেও প্রচার চালাচ্ছে জেলা পুলিশ। তারপরেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকায় উদ্বেগে
পুলিশ-প্রশাসন।

খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “আমরা সর্বত্র প্রচার চালাচ্ছি। গুজব ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টাও করা হচ্ছে। যদিও প্রতিটি গ্রামেই এমন কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা সবসময়ে অশান্তি বাধাতে চায়। তাঁরাই এ সব করছে। আমরা তাঁদের চিহ্নিত করার
চেষ্টা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lynched kidnapping children
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE