প্রতীকী ছবি।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বছর পাঁচেক আগে নন্দকুমারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মনীষা মেট্যাকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল রাস্তায়, তার বাবার সামনে। খুনের দায়ে বুধবার তমলুকের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফার্স্ট কোর্ট) স্মরজিৎ মজুমদার পুয়াদ্যা গ্রামের বাসিন্দা স্বরূপ মাইতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন। ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে।
আদালতে ছিলেন মনীষার বাবা উমাশঙ্করবাবু। এত দিন গ্রামের মানুষ তাঁকে মামলা থেকে পিছিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন। রায়ের আগে হুমকিও পেয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। ছোটখাটো ব্যবসা করে মামলার খরচ চালিয়েছেন। নিজের গ্রাম কাঞ্চনপুর থেকে ১৪-১৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আদালতে প্রতিটি শুনানিতে হাজির হয়েছেন। এ দিন উমাশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘অনেক লড়াই করে আজকের দিনটা এসেছে। খুব খুশি আমি।’’ মামলার সরকারি আইনজীবী সুব্রত মাইতি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর মামলা চলছে। এতদিনে সুবিচার হল।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময়েই মনীষাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় স্বরূপ। সায় ছিল না মনীষার। তাকে খুন করা হয় ২০১২-র ৭ এপ্রিল। সে দিন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ভ্যানরিকশায় বাড়ি ফিরছিল মনীষা। পিছনে সাইকেলে আসছিলেন উমাশঙ্করবাবু। বাড়ির কাছেই মনীষার পথ আটকে স্বরূপ তাকে কাটারি দিয়ে কোপাতে থাকে। মনীষাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। রাস্তায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে মানসিক ভারসাম্য হারান মনীষার মা। চিকিৎসার পর এখন তিনি কিছুটা সুস্থ। তখন থেকেই ছেলেকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন উমাশঙ্করবাবু।
উমাশঙ্করবাবু তবলার শিক্ষক ছিলেন। মনীষার মা গান শেখাতেন। মেয়ে খুনের পরে দু’জনেই সব ছেড়ে দেন। খুনের পরের দিনই গ্রেফতার হয়েছিল স্বরূপ। উমাশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘স্বরূপ মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত বলে ওর বাড়িতে অভিযোগ করেছিলাম। লাভ হয়নি। থানায় জানাই। স্বরূপকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে ওর পরিবারের অনুরোধে মামলা প্রত্যাহার করি। কিন্তু ছাড়া পেয়েই মেয়েকে শেষ করে দিল ও।’’ রায়ের পরে মনীষার স্কুল রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, ‘‘স্বরূপের শাস্তি যেন অন্য যুবকদেরও একটা শিক্ষা দিতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy