Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাঠক টানতে ভোল বদলাবে গ্রন্থাগার

প্রথম পর্যায়ে জেলার চারটি গ্রন্থাগারকে ‘মডেল লাইব্রেরি’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মেদিনীপুরের জেলা গ্রন্থাগার, ঘাটালের টাউন লাইব্রেরি, গোয়ালতোড়ের নবীন সঙ্ঘ লাইব্রেরি ও মোহনপুরের পাবলিক লাইব্রেরি মডেল লাইব্রেরি হিসেবে গড়ে উঠবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

কথায় আছে, বইয়ের চেয়ে বড় বন্ধু আর হয় না। যদিও এই কথাটা কার্যত ভুলতে বসেছে বর্তমান প্রজন্ম। ছোটরাও আর গ্রন্থাগারে এসে বই পড়ে না। বড়দেরই বা ফুরসত কই! তাই একে একে হারিয়ে যাচ্ছে বহু গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারের মরা গাঙে জোয়ার আনতে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরেও তৈরি হবে ‘মডেল লাইব্রেরি’।

প্রথম পর্যায়ে জেলার চারটি গ্রন্থাগারকে ‘মডেল লাইব্রেরি’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মেদিনীপুরের জেলা গ্রন্থাগার, ঘাটালের টাউন লাইব্রেরি, গোয়ালতোড়ের নবীন সঙ্ঘ লাইব্রেরি ও মোহনপুরের পাবলিক লাইব্রেরি মডেল লাইব্রেরি হিসেবে গড়ে উঠবে। এ জন্য তিন লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎ পানের কথায়, “মডেল লাইব্রেরিতে নানা পরিকাঠামো থাকবে। নানা সুবিধেও মিলবে। মানুষকে গ্রন্থাগারমুখী করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মডেল লাইব্রেরি গড়ে তোলা এরই অন্যতম।”

মডেল লাইব্রেরিতে কী কী থাকবে? আধুনিক রিডিং রুম থাকবে। তথ্যকেন্দ্র থাকবে। থাকবে ‘কেরিয়ার গাইডেন্স সেন্টার’ও। বয়স্ক ও শিশুদের জন্য পৃথক রিডিং রুমও থাকার কথা। পাঠকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আরও নানা পরিকাঠামো গড়ে উঠবে। জেলার শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রের কথায়, “পাঠকদের জন্যই গ্রন্থাগার। মানুষকে গ্রন্থাগারমুখী করতে নানা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।” নানা বই পড়তে মাঝে মধ্যেই গ্রন্থাগারে যান মেদিনীপুরের শপথ চক্রবর্তী। শপথও বলছিলেন, “এটা ডিজিট্যাল যুগ। ডিজিট্যাল যুগে নতুন প্রজন্ম ক্রমশ পাঠাগার বিমুখ হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে গ্রন্থাগারগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। তবেই পাঠকদের আকর্ষণ বাড়বে।”

বর্তমানে বেশিরভাগ গ্রন্থাগারেরই হাল খারাপ। অনেক গ্রন্থাগারের ছাদ থেকে জল পড়ে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। কোথাও আবার এক চিলতে ঘরেই চলে গ্রন্থাগার। টিনের ছাউনির উপর ত্রিপল বিছানো। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। সেই জল ভেজে বইপত্র। ঘরের মধ্যে ঢুকলে মনেই হবে না এটা কোনও পাঠাগার! বহু বই উই পোকায় কেটেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে উইয়ের ঢিপি।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১৫৮টি গ্রন্থাগার রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বহু বইও নষ্ট হয়। মেদিনীপুরের এক গ্রন্থাগারেই যেমন এক সময়ে ৬ হাজার বই ছিল। এখন ৪ হাজারে এসে ঠেকেছে। অর্থাৎ, প্রায় ২ হাজার বই নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎবাবুর অবশ্য আশ্বাস, “গ্রন্থাগারগুলোকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।” দফতরের এক কর্তা মানছেন, “গ্রামের দিকে বহু গ্রন্থাগারের বেহাল দশা। এটা অজানা নয়। তাই গ্রন্থাগারের চরিত্র বদলানোর জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। চাকরির তথ্য দেওয়ার জন্য তথ্যকেন্দ্র খোলারও পরিকল্পনা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE