খোঁজ: পড়ে থাকা প্লাস্টিকের পাত্রে জমা জলে মশার লার্ভা।
আইসক্রিমের কাপ, প্লাস্টিকের গ্লাস অথবা ডাবের খোলায় জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিনে পুরসভার সমীক্ষক দলের সদস্যরা সমীক্ষায় দেখেছেন, ঝাড়গ্রাম শহরের একাধিক বাড়ির পিছনে ও আশেপাশে জমা জলও মশার আঁতুড় ঘর। শহরের এই ছবি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের।
বিগত কয়েক মাসে ঝাড়গ্রাম জেলায় একাধিক ম্যালেরিয়া রোগীর সন্ধান মিলেছে। দিন কয়েক আগে শহরের বাসিন্দা এক কলেজ ছাত্রী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তাঁর রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা অত্যাধিক কমে যাওয়ায় ওই তরুণীকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানেই চিকিৎসা চলছে ওই কলেজ ছাত্রীর।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের গোড়ায় প্রশাসনিক স্তরে মশা নিধন কর্মসূচি ও সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম শহরে অবশ্য গত মে মাস থেকে মশা নিধন ও মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে সচেতন কর্মসূচি শুরু করেছে পুরসভা। গত তিন মাসে ৪১টি সমীক্ষক দলের সদস্যরা শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জমা জলের মশার লার্ভার আছে কি-না পরীক্ষা করে দেখছেন। লার্ভা মারতে মশানাশক তেলও স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পুরসভার তরফে তিন মাস ধরে ওয়ার্ড ভিত্তিক নিবিড় সচেতনতার প্রচারের পরেও কী ভাবে এখনও ডেঙ্গি মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে!
পুরসভা সূত্রে খবর, গত মে থেকে অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তিন মাসে ১৮টি ওয়ার্ডের ৩২১টি জায়গায় জমা জলে মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল। গত ১৬ থেকে ২০ অগস্ট ফের সমীক্ষা করা হয়। সাম্প্রতিক সমীক্ষার চিত্র যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। গত ১৬ অগস্ট একটি সমীক্ষক দলের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করে ৭১.৪৩ শতাংশ পাত্রে এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা পেয়েছিলেন। গত ২০ অগস্ট গড়ে ৩৩ শতাংশ পাত্রে ডেঙ্গি মশার লার্ভা পেয়েছে আরও পাঁচটি সমীক্ষক দল।
শহরবাসীর অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম শহরে নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ভ্যাটে পড়ে থাকা ডাবের খোলা, খালি বোতল, ভাঙা কৌটোতে জল জমে থাকছে। পরিত্যক্ত ওই সব পাত্রে ও ডাবের খোলায় জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে।
পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “আমরা সাধ্যমতো জঞ্জাল সাফাই করছি। বাড়ি-বাড়ি প্রচারও করা হচ্ছে। স্প্রে করা হচ্ছে মশানাশক তেল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘শহরের বাসিন্দাদের একাংশ বাড়িতে জল জমিয়ে রাখছেন। যেখানে সেখানে ডাবের খোলা, পরিত্যক্ত পাত্র ফেলে রাখা হচ্ছে। সচেতনতা বাড়াতে প্রচারে আরও জোর দেওয়া হবে।” ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, “গত কয়েকদিনের পুর-সমীক্ষায় শহরে বেশ ভাল রকম এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। সচেতনতার প্রচারে ও মশা মারার কর্মসূচিতে আরও জোর দেওয়ার জন্য পুরসভাকে বলা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy