কাজ হচ্ছে না। ইন্দা থেকে যফলা যাওয়ার রাস্তা বেহাল। —নিজস্ব চিত্র।
পুরবোর্ড গঠনের দেড় মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন বিভাগের স্থায়ী কমিটি গঠিত না হওয়ায় এখনও উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করতে পারল না খড়্গপুর পুরসভা। পুরসভায় বিরোধী দল কংগ্রেস স্থায়ী কমিটিতে কোনও পদ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়াতেই এখনও ওই কমিটি গড়া যায়নি বলে দাবি তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের। এ ভাবে কংগ্রেস উন্নয়নে বিরোধিতা করছে বলেও অভিযোগ তৃণমূলের। অন্য দিকে কংগ্রেসের দাবি, উন্নয়নের সদিচ্ছা থাকলে তাদের ছাড়াও তৃণমূল বোর্ড স্থায়ী কমিটি গঠন করতে পারে। এই রাজনৈতিক টানাপড়েনে উন্নত পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শহরবাসী।
গত ২৮ এপ্রিল পুরভোটের ফল প্রকাশের পর কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় পুরবোর্ড গঠন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। বিরোধী কাউন্সিলরদের নিশানা করে হুমকি, বোমা-গুলির সন্ত্রাসে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাম-বিজেপিকে ভাঙিয়ে তৃণমূল ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছয়। কংগ্রেসকে অবশ্য ভাঙতে পারেনি তারা। যদিও অশান্তির ওই পর্বে তিন কংগ্রেস কাউন্সিলরের নামে রুজু হয়েছে মামলা।
শাসকদল দুষ্কৃতী-পুলিশের আঁতাঁতে পুর-ক্ষমতায় এসেছে, এই অভিযোগ তুলে পুরবোর্ড গঠনের পরই কংগ্রেস জানিয়ে দেয়, বিরোধী দলনেতার পদ তারা নেবে না। পুরসভার স্থায়ী কমিটি এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রতিনিধি হিসাবেও কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা থাকবেন না বলে ঘোষণা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, পুরসভার পূর্ত, জঞ্জাল, কর-সহ সাতটি বিষয়ে স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। তাতে বিরোধী কাউন্সিলরদের থাকতে হয়। কারণ, একতরফা কমিটি হলে উন্নয়নের কাজে অসচ্ছতার অভিযোগ ওঠার সম্ভাবনা থাকে। কংগ্রেসের অনঢ় মনোভাবে এখনও গঠন করা যায়নি পুরসভার স্থায়ী কমিটিগুলি।
এই পরিস্থিতিতে ৪ জুন বোর্ড গঠনের পরে পুরসভা এখনও পর্যন্ত কোনও উন্নয়নমূলক কাজে হাত দিতে পারেনি। অথচ রাস্তা নির্মাণের জন্য পুরবোর্ডের হাতে ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা রয়েছে। কিন্তু স্থায়ী কমিটি না হওয়ায় রাস্তার কাজে হাত দেওয়া যাবে না। এ ভাবে বেশ কিছু প্রকল্পে টাকা থাকলেও স্থায়ী কমিটির অভাবে খরচ করতে পারছে না পুরবোর্ড। আগামী ৩১ জুলাই বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। তবে স্থায়ী কমিটি না হলে কী ভাবে কাজ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান কংগ্রেসের রবিশঙ্কর পাণ্ডে অবশ্য বলেন, ‘‘মামলায় জড়িয়ে আমাদের কলঙ্কিত করা হয়েছে। তাই স্থায়ী কমিটি ও বিরোধী দলনেতার পদে থাকব না ঠিক করেছি। কিন্তু সে জন্য উন্নয়নের কাজ আটকে রয়েছে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ, নতুন পুরবোর্ড ইচ্ছে করলে আমাদের ছাড়াই স্থায়ী কমিটি গঠন করতে পারে।’’
সমস্যা সমাধানে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনায় বসার চিন্তাভাবনা করছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসে বোঝানোর চেষ্টা করব। যদি ওঁরা স্থায়ী কমিটিতে থাকতে রাজি না হন, তখন আমাদের কাউন্সিলরদের নিয়েই কমিটি গঠন করতে বাধ্য হব।’’ কী করবে কংগ্রেস? রবিশঙ্করবাবুর জবাব, ‘‘আলোচনায় আমরা সব সময় রাজি। এটুকু বলতে পারি উন্নয়নের কাজে সমর্থন থাকবে। আর অনুন্নয়ন ও অস্বচ্ছতা দেখলে প্রতিবাদ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy