সুনসান: রাত হতেই দেখা নেই ট্রাফিক পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
রাত বাড়তেই উধাও পুলিশ! আর সেই সুযোগে শহরে দাপাচ্ছে বাইকবাহিনী। ‘নো এন্ট্রি’ রুটে ঢুকে পড়ছে ট্রাক। লাগামছাড়া গতিতে ছুটছে গাড়ি। এককথায় রাতের রেলশহরে অনিয়মই নিয়ম। দেখার অবশ্য কেউ নেই।
গত জানুয়ারি মাসে দিনেদুপুরে খড়্গপুরে আততায়ীদের গুলিতে খুন হয় শ্রীনু নায়ডু। চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনাও রেলশহরে নতুন নয়। শহরের নিরাপত্তা বাড়াতে তাই বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। ক্যামেরায় নিয়মিত নজরদারিও চালানো হয় বলে দাবি। যদিও প্রশ্ন উঠছে, রাতে রাস্তায় বেরিয়ে যদিও কেউ বিপদে পড়েন, তিনি কার কাছে সাহায্য চাইবেন। শহরের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তায় বেরতেই ভয় লাগে। পুলিশও থাকে না। সমস্যায় পড়লে কাকে ডাকব।’’
রাত ৯টার পর থেকেই শহরের ঝাপেটাপুর, কৌশল্যা, ভাণ্ডারিচক, সেনচক, বড়বাতি, পুরাতনবাজার, ইন্দা, অরোরা গেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ উধাও হয়ে যায় বলে অভিযোগ। আর পুলিশ চলে গেলেই শুরু হয় নিয়ম ভাঙার খেলা। শহরের কৌশল্যার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক অনুপম মাইতির অভিযোগ, ‘‘রাত সাড়ে ন’টার পরে কৌশল্যা মোড়-সহ শহরের কোনও মোড়েই ট্রাফিক পুলিশ নজরে পড়ে না। রাস্তাতেও পুলিশকে টহল দিতে দেখিনি। সত্যি বলতে প্রয়োজন পড়লেও রাতে চলাফেরা করতে ভয় লাগে।”
পুলিশি টহলদারি চোখে পড়ে না সাউথসাইড, পুরীগেট, আইআইটি বাইপাস, মালঞ্চ রোড, চণ্ডীপুর, বাসস্ট্যান্ড, ইন্দা কলেজ, কৌশল্যা, ছোটট্যাংরা, রেল হাসপাতাল, সিএমই গেট এলাকাতেও। পুরাতনবাজারের বাসিন্দা পেশায় রেল কর্মী কৃশানু আচার্য বলেন, “রাতে রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ বা রাস্তায় পুলিশি টহলদারি কোনওটাই চোখে পড়ে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাত হলেই সাউথসাইড এলাকা একেবারে নির্জন হয়ে যায়। সেই সময় অনেকে রেলস্টেশন, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন। অন্তত তাঁদের কথা ভেবে পথে নিরাপত্তা বাড়ানো উচিত।”
পুলিশের অবশ্য দাবি, নিয়মিত রাতে টহলদারি চালানো হয়। যদিও শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পুলিশের সময় বেশি লাগে। রাতের শহরের নিরাপত্তায় আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ নামালে সমস্যা মেটানো যাবে বলে শহরের একাংশ বাসিন্দার দাবি। শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে পুলিশের টহলদারি গাড়ি মোতায়েন করার দাবিও উঠেছে।
খরিদার বাসিন্দা ব্যবসায়ী প্রণবকুমার দাম বলেন, “রাত দশটার পরে রাস্তায় পুলিশ না থাকায় ভয় নিয়েই বাড়ি ফিরি। পুলিশের টহলদারি থাকলে সকলে আশ্বস্ত হবে।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীর সাফাই, “এটা কলকাতা নয়। রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ থাকে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিজে, এসডিপিও ও আইসি সপ্তাহে দু’দিন রাতে শহরে টহল দিই। সমস্যার কথা নয়। আশা করছি, কর্মীর অভাব মিটলে সমস্যা মিটে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy