Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাতভর বিক্ষোভে অসুস্থ অধিকর্তা

বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ধর্না-বিক্ষোভের মাত্রা বাড়ে শুক্রবার। ওই দিন সকাল থেকে কলেজের প্রশাসনিক অফিসে অধিকর্তা-সহ মোট পাঁচজন আধিকারিককে আটকে রেখে বিক্ষোভ চলে।

কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

তৃতীয় দিনে গড়াল কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ুয়াদের আন্দোলন। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ধর্না-বিক্ষোভের মাত্রা বাড়ে শুক্রবার। ওই দিন সকাল থেকে কলেজের প্রশাসনিক অফিসে অধিকর্তা-সহ মোট পাঁচজন আধিকারিককে আটকে রেখে বিক্ষোভ চলে। রাত দেড়টা নাগাদ কলেজের অধিকর্তা নরেন্দ্রনাথ জানা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় আম্বুল্যান্স এনে নরেন্দ্রনাথবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় মেচেদার একটি নার্সিংহোমে। কলেজের সহকারী-অধিকর্তা, রেজিস্ট্রার-সহ অন্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা অবশ্য রাতভর ঘেরাও হয়েছিলেন। বিক্ষোভরত পড়ুয়ারাই তাঁদের খাবার দিয়ে আসেন।

ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করতে না পারা, হস্টেলে নিম্নমানের খাবার-সহ একগুচ্ছ অভিযোগে কলেজ অধিকর্তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার ধর্না-বিক্ষোভের প্রথম দিনে প্রথম বর্ষের ক্লাস হয়েছিল। তবে শুক্র-শনি গোটা কলেজেই বন্ধ ছিল পঠনপাঠন। শনিবার দুপুর দু’টো পর্যন্ত বিক্ষোভ চলার পরে পরিচালন সমিতির কর্তাদের সঙ্গে পড়ুয়াদের আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দেন কর্তৃপক্ষ। তারপর ঘেরাও-মুক্ত হন কলেজের আধিকারিকরা।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করতে পারছেন না। পাশ করেও অনেকে চাকরি পাচ্ছেন না। তা ছাড়া, মাসে খাওয়া-খরচ বাবদ মাথাপিছু দু’হাজার টাকা করে দিলেও হস্টেলে অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা এ দিন বলেন, ‘‘কলেজ পরিচালন সমিতির কর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনার আশ্বাস দেওয়ায় এ দিন প্রশাসনিক আধিকারিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের বিক্ষোভ চলবে।’’

পড়ুয়াদের অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের রেজিস্ট্রার শৈবাল প্রধান বলেন, ‘‘চাকরি না পাওয়ার কথা ঠিক নয়। ক্যাম্পাসিং নিয়মমাফিকই হচ্ছে। আর হস্টেলেও খুব খারাপ মানের খাবার দেওয়া হয় না।’’ কলেজের এক আধিকারিকের মতে, পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম থাকায় সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে জানিয়েছেন, পরীক্ষা দিতে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ হাজিরা থাকতে হবে। তারপরেই এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

হাজার খানেক পড়ুয়া রয়েছেন কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। পড়াশোনা শিকেয় ওঠায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অভিভাবক প্রভাত পান বলছিলেন, ‘‘ক্লাস না হলে তো ছেলে-মেয়েদেরই ক্ষতি। দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে যাতে ক্লাস শুরু হয়, কর্তৃপক্ষের সেই ব্যবস্থা করা উচিত।’’ এলাকার সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী শুক্রবার রাতে কলেজে এসেছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দিব্যেন্দুর আশ্বাস, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে পরিচালন সমিতিতে আলোচনা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolaghat Engineering College Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE