Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
পুরভোটে পাঁশকুড়া

নাকি কৌশল, বলছে বাম-কংগ্রেস

ভোট ঘোষণার পর থেকেই বিরোধী শূন্য পুরসভা গড়ার ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তারপর প্রায় প্রতিদিন দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব থেকে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৭
Share: Save:

নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছিল শাসক তৃণমূল। পাঁশকুড়া পুরসভা নির্বাচনে দলের ‘হেভিওয়েট’-রা এসে একাধিক সভা করে গিয়েছেন দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে। সেই হিসাবে পাল্লা দিয়েছে বিজেপিও। একের পর এক সভায় যোগ দিয়েছেন দলের রাজ্য ও জেলা নেতারা। তুলনায় ম্রিয়মাণ বাম-কংগ্রেসের প্রচার।

এটাকে অবশ্য তাঁদের নির্বাচনী কৌশল বলে জানাচ্ছেন বাম নেতারা। আগেভাগে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতেও চাননি তাঁরা। বলেছিলেন, মনোনয়ন পেশের আগে নাম ঘোষণা করলে হুমকি আসবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৮ ওয়ার্ডের পুরসভায় বামেরা দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিয়েছে মাত্র সাতটি আসনে। চারটি আসন তারা ছেড়েছে জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে। তিনটি আসনে জোট সমর্থিত নির্দল প্রার্থী রয়েছেন। অর্থাৎ, চারটি আসনে বামেরা প্রার্থী দিতেই পারেনি। ইতিমধ্যে দু’টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিতও করে ফেলেছে তৃণমূল।

ভোট ঘোষণার পর থেকেই বিরোধী শূন্য পুরসভা গড়ার ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তারপর প্রায় প্রতিদিন দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব থেকে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। শুক্রবার প্রচারের শেষবেলায়ও প্রচারে আসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী হিসাবে প্রচারে ঝড় তুলতে মরিয়া বিজেপিও। একদা ক্ষমতাসীন বামেরা কিন্তু এ দিনও বাড়ি বাড়ি প্রচার সেরেছেন।

২০১২ সালের পুরভোটে ১৭ টি আসনের মধ্যে ১২টিতে তৃণমূল ও পাঁচটিতে বামেরা জিতেছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভাতেও প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে পুরসভার ৬ টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু এ বার খোদ বিরোধী দলনেতার ওয়ার্ডেই (৫ নম্বর) প্রার্থী দিতে পারেনি বামফ্রন্ট। বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থীদের সমর্থনে কোনও প্রকাশ্য সভাই হয়নি। রাজনৈতিক মহলে তাই একটাই প্রশ্ন ঘুরছে, ভোটের আগেই কি ময়দান ছেড়ে দিল বাম-কংগ্রেস?

সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির বাড়ি পাঁশকুড়াতেই। নিজের এলাকাতেও প্রচার করেননি তিনি। নিরঞ্জনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘দলের রাজ্য ও জেলা নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে সমাবেশ বা মিছিল করা হলে সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা চিহ্নিত হয়ে যাবেন। তাতে তৃণমূলের আক্রমণ করতে সুবিধে হবে। তাই শুধু প্রার্থীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার ও কিছু ছোট মিছিল করা হয়েছে।’’

কিন্তু প্রকাশ্য সভা বা মিছিল না-হলে সাধারণ সমর্থকদের মনোবল ফিরবে কী করে? নিরঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘আমাদের সমর্থকদের মনোবল অটুট আছে।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আনোয়ার আলির অভিযোগ, ‘‘পাঁশকুড়ায় প্রচারসভা ও মিছিলের জন্য একাধিকবার অনুমতি চেয়েও পাইনি। নানা অজুহাতে প্রশাসন আমাদের কর্মসূচি করতে দেয়নি।’’

এ সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাঁশকুড়া পুরসভার বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান ও তৃণমূল নেতা নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘পাঁশকুড়ার পুরসভার নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই আমাদের দলের সভা ও মিছিলে মানুষের ঢল নেমেছে। এ বার বামফ্রন্ট সহ বিরোধীদের কর্মী-সমর্থকদের তো দেখা পাওয়াই যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষের সমর্থন না থাকলে মিছিল বা সভা করবে কী ভাবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panskura Municipality Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE