জাতীয় খাদ্য সুরক্ষার রেশনকার্ড মেলেনি। তাই রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে পরিবারের চার সদস্যের রেশন কার্ডের জন্য এক বছর আগে আবেদন করেছিলেন নন্দকুমারের চকপুয়্যাদা গ্রামের বাসিন্দা আশিস বেরা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পরিবারের তিনজনের রেশনকার্ড এসেছে। তবে বাদ পড়েছেন আশিসবাবুর স্ত্রী সোনা বেরা। বিরক্ত আশিসবাবুর কথায়, ‘‘প্রথম বার পাইনি। তারপর আবার আবেদন করে একজনের কার্ড পেলাম না। এক কাজের জন্য কতবার খাদ্য দফতরের অফিসে যাব বলুন তো!’’
হলদিয়ার রায়রায়চকে বাড়ি প্রতিবন্ধী নয়ন শিটের। পরিবারে রয়েছে চারজন। অথচ আবেদনের পর হাতে এসেছে শুধু নিজের রেশন কার্ডটা। শুধু তাই নয়, নিজের কার্ডেও নাম বদলে গিয়েছে বিলকুল। সেটাও সংশোধন করেছেন। তারপর সেই কার্ডও আসেনি। নয়নের কথায়, ‘‘পা টা আমার অকেজো। অত বড় লাইনে দাঁড়াতে পারি না। আর এক কাজের জন্য এত কষ্ট করতে হবে?’’
হলদিয়া শহরের এর কেশন গ্রাহক তো আবার নতুন কার্ড পেয়ে থ। কারণ, তাঁর রেশন ডিলারই বদলে গিয়েছে। নতুন কার্ডের হিসেবে তাঁকে রেশন আতে পাড়ি দিতে হবে পাঁচ কিলোমিটার!
নতুন ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের এমনই নানা বিভ্রান্তি নিয়ে জেরবার পূর্ব মেদিনীপুরের অসংখ্য মানুষ। রেশন কার্ড পাওয়ার জন্য বার বার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আবেদন করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। একবার আবেদন করেও রেশন কার্ড পাননি এমন পরিবার ও ব্যক্তিদের কাছ থেকে সম্প্রতি ফের আবেদন পত্র জমা নেওয়া হয়েছে জেলা জুড়ে। আর তাতেই জেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ বাসিন্দার আবেদনপত্র জমা পড়েছে বলে জেলা খাদ্য দফতর সূত্রই জানাচ্ছে।
পরিবারের একজন সদস্যও হাতে রেশন কার্ড পাননি এরকম ৬৮ হাজার আবেদন পত্র (৩ নম্বর ফর্ম) জমা পড়েছে। পরিবারের একাংশ সদস্য কার্ড পাননি এ রকম প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার আবেদনপত্র (৪ নম্বর ফর্ম) জমা পড়েছে। কার্ড না পাওয়ার কারণ নিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামক সুনয় গোস্বামী বলেন, ‘‘আবেদনের পত্র জমা নেওয়ার পর কিছু ক্ষেত্রে তথ্যগত অসম্পূর্ণতা রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আবার বিভিন্ন কারণে রেশন কার্ড আসেনি। বাসিন্দাদের কাছ থেকে ফের আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে।’’
হলদিয়ার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রেশন ডিলার সবিতা পট্টনায়ক জানালেন, তাঁর আরও দুটি রেশনের ডিলারশিপ রয়েছে। একটি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। আর অন্যটি দশ কিলোমিটার দূরে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতুলবেড়িয়ায়। নতুন কার্ডের হিসেবে তাঁর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাড়ে তিনশো পরিবারের রেশন পাওয়ার ঠিকানা হয়ে গিয়েছে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। ফলে রেশন গ্রাহকরা যেমন বিপাকে। তেমনই সমস্যায় খোদ রেশন ডিলারও।
তবে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যা সমাধানে আরও বেশি ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করা হব । এতে ভোগান্তি কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy