Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হাতির হানা, ক্ষোভে ভাঙচুর

দলমার দাঁতালের পালকে গভীর জঙ্গলে খেদানো ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এ বার বন দফতরের হুমগড় রেঞ্জ অফিসে ভাঙচুর চালাল। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বন দফতরের ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণব সেনগুপ্ত।

ভাঙা: গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মূল ফটকও। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা: গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মূল ফটকও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

একরের পর একর জমির ফসল নষ্ট করছে দামালের দল। হাতির তাণ্ডবে ভাঙছে ঘরবাড়িও। মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরেও হুঁশ ফেরেনি বন দফতরের। দলমার দাঁতালের পালকে গভীর জঙ্গলে খেদানো ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এ বার বন দফতরের হুমগড় রেঞ্জ অফিসে ভাঙচুর চালাল। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বন দফতরের ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণব সেনগুপ্ত। ঘণ্টাখানেক পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণববাবু বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা রেঞ্জ অফিসে ভাঙচুর চালায়। আসবাব-সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজও নষ্ট হয়েছে। তাণ্ডবে নষ্ট হয়েছে দু’টি বাইকও।”

মঙ্গলবার রাত থেকেই গোয়ালতোড়ের বিভিন্ন গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতির পাল। স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে খবর, গত দিনদিন ধরে স্থানীয় কুঁদরিশোল, হদহদি, টাঙাশোল, ওখলা, খড়কাটা-সহ আট-দশটি গ্রাম গুলিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে হাতির পাল। দলটিতে ৬০টি হাতি রয়েছে। হাতির তাণ্ডবে বিস্তীর্ণ এলাকার জমির ধান নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতেই হাতির পালকে এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে খেদানোর সময় গ্রামবাসীদের সঙ্গে হুলাপার্টির সদস্যদের সংঘর্ষে এক যুবক খুনও হয় বলে অভিযোগ। ওই রাতেই হাতির দলটি স্থানীয় হদহদির জঙ্গলে চলে যায়।

বুধবার ফের টাঙাশোল জঙ্গলে ঢোকে হাতির পাল। ওইদিন রাতভর ওই সব গ্রামে ধান ও আনাজ খেতে নেমে ক্ষতি করে হাতি। বৃহস্পতিবারও হাতির পালটি টাঙাশোল জঙ্গলেই রয়েছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, পালটি গভীর জঙ্গলে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হচ্ছে না বন দফতর। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ স্থানীয় কুঁদরিশোল, টাঙাশোল, ওখলা-সহ সংলগ্ন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা গোয়ালতোড় থানার হুমগড় রেঞ্জ অফিসে ভাঙচুর চালান। সে সময় অফিসেই ছিলেন রেঞ্জার বিশ্বনাথ মুদিকড়া-সহ অন্য কর্মীরা। ক্ষুব্ধ বসিন্দারা রেঞ্জ অফিসের মূল গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন। দরজা-জানালা, কর্মীদের বাইক, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি, “এক বিঘা ধান চাষে খরচ হয়েছে আট-দশ হাজার টাকা। দিন কয়েকের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু তার আগে হাতির পাল সব সাবাড় করে দিয়েছে।” কুঁদরিশোল গ্রামের বাসিন্দা কৃষক হেমন্ত দাসের অভিযোগ, “বন দফতর বিঘা প্রতি তিন হাজার দু’শো টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে। সেই টাকাও কবে পাওয়া যাবে ঠিক নেই।” ক্ষতিগ্রস্তদের সাফ কথা, ক্ষতিপূরণের চেয়ের বেশি জরুরি হাতির পালকে এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া।

ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই লালগড়ে হাতির দল তাণ্ডব চালায়। গত তিনদিন ধরে গোয়ালতোড়ের বিভিন্ন এলাকাতেও একই রকম ভাবে ফসলের ক্ষতি করছে দলমার পাল। ডিএফও অর্ণববাবু বলছেন, “শুক্রবার থেকে হাতির দলকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হবে। অশান্তি এড়াতে গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করেই হাতি খেদানো
শুরু করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE