প্রতিবাদ: পুলিশকে ঘিরে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের প্রশ্রয়েই শহরের বুকে রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি বাজির ব্যবসা— এমন অভিযোগে এ বার পথে নামলেন মেদিনীপুরের ধুনুরি বস্তির লোকজন। এখানেই একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে ধুনুরি বস্তিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়দের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ এখন রাতে মজুত বাজি সরাচ্ছে। অথচ, অবৈধ বাজি কারবার বন্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। কাল, সোমবার আন্দোলন কর্মসূচিরও ডাক দেওয়া হয়েছে। ওই দিন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের দফতরে ডেপুটেশন দেবেন এলাকাবাসী। স্থানীয় আনোয়ার খালি খান বলেন, ‘‘বহু দিন ধরে এখানে বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি হচ্ছে। আগেও বহুবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। সব জেনে পুলিশ চুপ থাকে।’’
মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানা থেকে ধুনুরি বস্তির দূরত্ব মেরেকেটে পাঁচশো মিটার। এ দিন পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভের খবর পেয়ে এলাকায় আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়। শম্ভুনাথবাবুও বলেন, “আশা করব, পুলিশ-প্রশাসন এ বার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধুনুরি বস্তি এলাকায় শেখ শাহজাদার বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির সময়ই বিস্ফোরণ হয় বলে অভিযোগ। ঝলসে যান মমতাজ বেগম এবং মামনি বিবি। পরে দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরে শাহজাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ইতিমধ্যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বক্তব্য, “ওই বাড়িতে বাজি মজুত ছিল। বাজি তৈরি হত না।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাদাও জানিয়েছে, তার বাড়িতে বাজি মজুত ছিল, বাজি তৈরি হত না। স্থানীয়দের অবশ্য দাবি, বহু বছর ধরেই এখানে বাজি তৈরি হচ্ছে। বেশ কয়েকবার বিস্ফোরণও হয়েছে। দু’বছর আগের বিস্ফোরণে এক যুবক জখম হন। কিন্তু শিক্ষা নেয়নি পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা আলিয়া বিবির কথায়, “প্রতি বছর উৎসবের মরসুমে এখানে বাজি তৈরি হয়। এ বারও শব্দবাজি তৈরির কাজ চলছিল।’’
মেদিনীপুরের একাধিক এলাকায় বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি হয় বলে অভিযোগ। এর মধ্যে মাঝারি মাপের কারখানাই বেশি। দুষ্টচক্রের লোকজন অবৈশ বাজির কারবারে এমন কারখানাই পছন্দ করে। কারণ, গলিপথের আড়ালে ওই সব কারখানায় পুলিশের নজর কম থাকে। ধুনুরি বস্তির বাড়িটিও গলির মধ্যে। তবে বেআইনি বাজি ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, এ কথা মানতে নারাজ জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝেমধ্যেই অভিযান চলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy