Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নম্বরহীন বাইক থামিয়ে রোষের মুখে পুলিশই

মাস খানেক আগে শালবনিতে দুর্ঘটনায় দুই স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার রোষের মুখে পড়েন পুলিশের আইসি। এ বার খড়্গপুরে নম্বর প্লেট দেখতে না পেয়ে পুলিশ বাইক থামাতে গেলে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন এক বাইক আরোহী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

মাস খানেক আগে শালবনিতে দুর্ঘটনায় দুই স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার রোষের মুখে পড়েন পুলিশের আইসি। এ বার খড়্গপুরে নম্বর প্লেট দেখতে না পেয়ে পুলিশ বাইক থামাতে গেলে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন এক বাইক আরোহী। শুক্রবার ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে খড়্গপুর-২ ব্লকের বারোমাইলে এই ঘটনার পরেও নিশানার মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশকে ঘিরে স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভে নেতৃত্বে দেন যুব তৃণমূলের কালিয়ারা-২ অঞ্চল সভাপতি সূর্যকান্ত বেরা।

প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও ডেবরা টোলপ্লাজার কাছে কালিয়ারা-২ অঞ্চলের বারোমাইলে জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে বাইক আরোহীদের হেলমেট ও কাগজপত্র পরীক্ষা করছিল পুলিশ। সেই সময় নম্বর প্লেট না দেখতে পেয়ে ডেবরা থেকে খড়্গপুরগামী একটি বাইক দাঁড় করাতে যায় পুলিশ। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বাইক আরোহী সৌমেন মাইতি দ্রুত লেন পরিবর্তন করে ফের ডেবরার দিকে যেতে যান। বাইক ঘোরানোর সময় একটি গাড়ি ধাক্কা মারে সৌমেনবাবুর বাইকে। ডেবরার খানামোহনের বাসিন্দা জখম সৌমেনবাবুকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় জড়ো হয় স্থানীয়রা। জাতীয় সড়কে পুলিশি অভিযান বন্ধের দাবিতে যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সূর্যকান্তবাবুর নেতৃত্বে পুলিশকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে পুলিশ আধিকারিকরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচারে যেখানে পথবিধি মেনে গাড়ি চালানোর আবেদন জানানো হচ্ছে। সেখানে রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় নম্বর প্লেটহীন একটি বাইক আটকানোর পরে পুলিশকে ঘিরেই বিক্ষোভে উঠছে প্রশ্ন।

বিক্ষোভকারীদের অবশ্য দাবি, পরীক্ষার নামে প্রতিদিন বাইক আরোহীদের হয়রান করে পুলিশ। এমনকী নানা কারণ দেখিয়ে টাকা আদায়ও চলে। যুব তৃণমূল নেতা সূর্যকান্তবাবুর অভিযোগ, “জাতীয় সড়কে পুলিশ যে ভাবে ধড়পাকড়ের নামে লাঠি-বন্দুক হাতে বাইক আটকানোর চেষ্টা করে তাতে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিদিন বাইক দাঁড় করিয়ে টাকা নেয় পুলিশ। এই হয়রানি থেকে বাঁচতে গিয়েই মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। পুলিশি নীতি মেনে কাজ করুক। কিন্তু হয়রানি বন্ধের দাবিতেই বিক্ষোভ দেখিয়েছি।” জখম সৌমেনবাবুও দাবি করছেন, “প্রতিদিনই এ ভাবে পুলিশ হয়রানি করে। এ দিন একটি কাজে যাওয়ার তাড়া ছিল। পুলিশকে এড়িয়ে যেতে গেলে একটি গাড়ি ধাক্কা মারে।”

হয়রানির অভিযোগ মানতে নারাজ খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী। তিনি বলছেন, “পুলিশ হয়রানি করছে এই অভিযোগ ঠিক নয়। জাতীয় সড়কের ওই টোলপ্লাজায় যেহেতু যানবাহনের গতি কম থাকে তাই ওই জায়গাই বাইকের কাগজ পরীক্ষার জন্য সঠিক জায়গা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পথ নিরাপত্তা ও সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই এই অভিযান চলে। স্থানীয়রা জাতীয় সড়ক দিয়ে যতবার যাচ্ছেন, ততবারই বাইক আটকানোর জন্য হয়তো তাঁরা এমন ভাবছেন। কিন্তু অভিযান চলবেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police illegal bikes public
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE