Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মা-ছেলের দেহ উদ্ধার খড়্গপুরে

এ দিন সকালে ছেলেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য ডাকতে গিয়ে ঘরের সিলিংয়ের রডে গামছার ফাঁসে ঝুলতে দেখেন শুভমের বাবা রাজেশ শর্মা। ছেলেকে হারিয়ে হাহাকার করতে শুরু করেন কল্যাণীদেবী। দুপুরে বাড়ির শৌচাগারে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ।

মৃত: শুভম ও কল্যাণী শর্মা।

মৃত: শুভম ও কল্যাণী শর্মা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২০
Share: Save:

মাঝে মাত্র কয়েক ঘটনার ব্যবধান। তারই মধ্যে একই বাড়িতে উদ্ধার হল মা ও স্কুলপড়ুয়া ছেলের ঝুলন্ত দেহ। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ ভগবানপুর এলাকায়। মৃতেরা হলেন, শুভম শর্মা (১৬) ও তার মা কল্যাণী শর্মা (৩৫) । শুভম কলাইকুণ্ডা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কমার্স বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ দিন সকালে ছেলেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য ডাকতে গিয়ে ঘরের সিলিংয়ের রডে গামছার ফাঁসে ঝুলতে দেখেন শুভমের বাবা রাজেশ শর্মা। ছেলেকে হারিয়ে হাহাকার করতে শুরু করেন কল্যাণীদেবী। দুপুরে বাড়ির শৌচাগারে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মায়ের বকুনি খেয়েই অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে শুভম। আর ছেলের শোকে আত্মহত্যা করেছেন কল্যাণীদেবী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভমের বাবা রাজেশ শর্মা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। সংসারে অভাব থাকলেও এত দিন শুভমের পড়াশোনার খরচ চালাতেন কাকা দীপক শর্মা। তিনি পেশায় রেলকর্মী। তাই ছেলেকে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগে পড়াশুনোর পাশাপাশি কম্পিউটার কোর্সের খরচ জোগাড়ে বেগ পেতে হয়নি শুভমের বাবা-মাকে। সম্প্রতি দীপকের বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ফলে, শুভম দ্রুত নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল। সম্প্রতি জিএসটির জন্য এক বছরের কম্পিউটার কোর্সের মেয়াদ বাড়িয়ে আঠারো মাসের কোর্স করতে চেয়েছিল সে।

রবিবার এ নিয়েই গোলমাল বাধে। শুভম মাকে জানায়, গোলবাজারের এক কম্পিউটার সেন্টারে নতুন কোর্সে ভর্তি হতে চায় সে। এ জন্য বাড়তি ১৫ হাজার টাকা ফি লাগবে। কল্যাণীদেবী তাতে রাজি হননি। কম্পিউটারের শিক্ষককে বাড়িতে এনে কথা বলবেন বলে জানিয়ে দেন তিনি। সেই অভিমানেই শুভম আত্মঘাতী হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ। এলাকার বাসিন্দা রাকেশ শর্মা বলেন, “নতুন কোর্সের ব্যাপারে শুভমের মা রাজি হননি। তারপরই সকালে শুভমের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গেল। কয়েক ঘন্টা পর ওর মায়ের।” শুভমের বাবা রাজেশ শর্মা অবশ্য বকাবকির কথা মানেননি। তিনি বলেন, “কখনও ওর পড়াশোনায় বাধা দিইনি। নতুন করে আরও একটি কোর্স করতে চাইছিল। সে ব্যাপারে কথা বলতে ওর মা কম্পিউটার শিক্ষককে নিয়ে আসতে বলেছিল। এর পরে কোত্থেকে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না।” সোমবার রাতেই মা-ছেলের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয় মন্দিরতলা শ্মশানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kharagpur Dead Body খড়্গপুর Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE