অবশেষে বরফ গলল। বরখাস্ত তিন কর্মীকে কাজে ফেরানোর আশ্বাসে কর্মবিরতি উঠে গেল রেল কারখানায়। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস মঙ্গলবার দুপুর থেকে খড়্গপুর রেল কারখানার ডিজেল শপে কাজ শুরু হয়েছে। গত শনিবার থেকে ডিজেল শপের কর্মীরা জোট বেঁধে কর্মবিরতি পালন করছিলেন। শুক্রবার তিন কর্মীকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদেই ছিল এই কর্মসূচি। সমস্ত কর্মী সংগঠনের ‘জয়েন্ট ফোরাম’ গড়ে কর্মবিরতি চলছিল।
এ দিন ফোরামের প্রতিনিধিরা কারখানার চিফ ওয়ার্কস ম্যানেজারের (সিডব্লিউএম) সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। তিন কর্মীকে কাজে পুনর্বহাল-সহ তিনটি দাবি পূরণের আশ্বাস মেলার পরে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “কারখানার সিডব্লিউএমের সঙ্গে কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়েছে। আমরা জানিয়েছি, ওই তিন কর্মী রেলের আইন মেনে আবেদন করলে নিশ্চয়ই কাজে ফেরানোর বিষয়টি বিবেচনা
করা হবে।”
কারখানার ক্যান্টিনের পরিষেবাজনিত নানা অভিযোগ নিয়ে আধিকারিককে ঘেরাও করেছিলেন ডিজেল শপের কর্মীরা। সেই আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন বাদল অধিকারী, কৌশিক সরকার ও সেলিম আখতার। রেল সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে হাতাহাতি হওয়ায় এই তিনকর্মী-সহ পাঁচজনের নামে মামলা রুজু হয়।
রেল কর্তৃপক্ষও কমিটি গড়ে তদন্তে নামেন। তারপরই তিনকর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরই প্রতিবাদে ডিজেল শপে কর্মবিরতি শুরু হয়। মেনস্ ইউনিয়ন, মজদুর সঙ্ঘ, মেনস্ তৃণমূল-সহ বিভিন্ন কর্মী সংগঠন জয়েন্ট ফোরাম গড়ে ওই তিন কর্মীকে কাজে পুনর্বহাল, নতুন করে কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া ও কর্মবিরতির জেরে না হওয়া কাজ বাড়তি সময়ে শেষ করার দাবি জানানো হয়।
এই সব দাবি নিয়েই এ দিন বেলা সাড়ে ১২টায় সিডব্লিউএমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ফোরামের প্রতিনিধিরা। প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে আলোচনা চলে।
আলোচনা শেষে ফোরামের আহ্বায়ক কে কৃষ্ণা রাও বলেন, “সিডব্লিউএম আমাদের দাবিগুলি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। বহিষ্কৃত তিনকর্মীকে কাজে ফেরানোর আবেদন জানাতে বলা হয়েছে। এই জয় কর্মী ঐক্যের জয়।” আন্দোলনে সামিল মেনস্ ইউনিয়নের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক অজিত ঘোষালেরও বক্তব্য, “কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই করেছেন।”
সোমবার রেল কারখানা ছুটি ছিল। তবে এ দিন সকাল থেকেই ফের কর্মবিরতির কর্মসূচিতে জমায়েত হয়েছিল ডিজেল কর্মীরা। কিন্তু দুপুরে রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস মেলার পরে খুশির জোয়ার দেখা যায় ডিজেল শপে। ওই শপের কর্মী সুমন্ত চৌধুরী বলেন, “আমাদের এই আন্দোলন জয়ী হয়েছে। এ জন্য সংবাদমাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy