প্রথম: নতুন পোশাকে ছোট্ট রাহুল। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৬০টি। তার মধ্যে মাত্র ১৫টি প্রসূতি বিভাগের জন্য বরাদ্দ। অধিকাংশ সময়েই মাটিতে প্রসূতিদের রাখতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও গত সাত মাস ধরে হাসপাতালেই বেড়ে ওঠে এক শিশুপুত্রের অন্নপ্রাশনের ব্যবস্থা করলেন চিকিৎসক-কর্মীরা। শনিবার নারায়ণগড়ের বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে এই আয়োজন হয়েছিল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ জানুয়ারি বেলদা স্টেশনে ঘুরতে থাকা এক ভবঘুরে অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় আশাকর্মীরা। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, স্বামী বিচ্ছিন্না ওই মহিলার নাম রিঙ্কি গিরি। ৮ জানুয়ারি রাতেই রিঙ্কি এক শিশুপুত্রের জন্ম দেন। সেই থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন মা-ছেলে। নার্স তনিমা দিন্দা, সোনালি দাস, ঝুনু ঘোড়াইরা তাঁদের যত্ন করছেন পরিজনেদের মতোই। নার্স, কর্মী ও চিকিৎসকেরই শিশুটির নাম
রেখেছন রাহুল।
এ দিন রাহুলের অন্নপ্রাশন উপলক্ষে হাসপাতালের রাঁধুনি উমা দাস পায়েস বানিয়ে কালীমন্দিরে পুজো দেন। পরে সেই পায়েস রাহুলকে খাইয়ে দেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নারায়ণগড়ের বিডিও মানিক সিংহ মহাপাত্র, ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল প্রমুখ। হাসপাতাল সাজানো হয়েছিল। পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়াও হয়েছে। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, ভাজা, তরকারি, মাছ, চাটনি ও পায়েস। চাঁদা তুলেই সব র আয়োজন করা হয়।
এর আগে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে এক শিশুকন্যার অন্নপ্রাশন হয়েছে। বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালের প্রধান তথা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল বলেন, “অসুবিধা অনেক। তাও ওই মা ও শিশুপুত্রের জন্য আলাদা শয্যা দেওয়া হয়েছে। মানবিকতার খাতিরেই সব আয়োজন। তাই প্রথা মেনে অন্নপ্রাশনও দিলাম।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, “কর্মীদের অন্নপ্রাশনের আয়োজন দেখে আমি খুশি।”
কিন্তু কতদিন নবজাতককে নিয়ে রিঙ্কি হাসপাতালে থাকবেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। বিডিও মানিকবাবু অবশ্য বলেন, “ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে বলেছি নিজ ভূমি প্রকল্পে ওই মহিলার জন্য একটি জমির ব্যবস্থা করতে। জমি পেলে আমরা কোনও গৃহনির্মান প্রকল্পে ওঁদের বাড়ি বানিয়ে দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy