Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দু’টি ঘরে দশটি ক্লাস, ভোগান্তি

দশটি ক্লাসের জন্য বরাদ্দ দু’টি ঘর! বছর পাঁচেক আগে পুরনো ভবনের অ্যাসবেস্টসের ছাদ উড়ে গিয়েছে। সেই ভবন এখন পরিত্যক্ত।

পাঠ: এ ভাবেই চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র

পাঠ: এ ভাবেই চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

দশটি ক্লাসের জন্য বরাদ্দ দু’টি ঘর!

বছর পাঁচেক আগে পুরনো ভবনের অ্যাসবেস্টসের ছাদ উড়ে গিয়েছে। সেই ভবন এখন পরিত্যক্ত। ঝাড়গ্রাম ব্লকের একদা মাওবাদী অধ্যুষিত বৃন্দাবনপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে সাকুল্যে দু’টি ঘর। সেখানেই চলছে বাংলা ও সাঁওতালি মাধ্যমের দশটি ক্লাস।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ মুর্মু বলেন, “পর্যাপ্ত ক্লাস ঘর নেই। তাই দু’টো ঘরে আর বারন্দায় ভাগাভাগি করে দশটি ক্লাস নেওয়া হয়। সমস্যার কথা জানিয়ে প্রশাসনিক মহলে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে।”

ঝাড়গ্রাম শহর থেকে কিলোমিটার পাঁচেক দূরে একদা মাওবাদীদের খাসতালুক আদিবাসী অধ্যুষিত বৃন্দাবনপুর গ্রামের এই স্কুল ভবনের ছাদ ঝড়ে উড়ে গেলেও আজ পর্যন্ত সংস্কারের টাকা বরাদ্দ হয়নি। প্রধান শিক্ষকের দাবি, ব্লক অফিসে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে কাজ হয়নি। জঙ্গলমহল জুড়ে এত উন্নয়নের মাঝে কেন স্কুলটিকে দুয়োরানি করে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। অথচ স্কুলে চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকা, এ ছাড়া একজন অলচিকি পার্শ্বশিক্ষক আছেন। দু’টি মাধ্যমে মোট পড়ুয়া সংখ্যা ৬৮। অভাব শুধু ক্লাসঘরের।

১৯৬০ সালে চালু হওয়া স্কুলটি আদতে বাংলা মাধ্যমের। কিন্তু এলাকার সিংহভাগ বাসিন্দা আদিবাসী। কয়েক বছর আগে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় স্কুলের নতুন ভবন তৈরি হয়। সেখানেই রয়েছে দু’টি ক্লাস ঘর। ২০১৫ সালে স্কুলে সাঁওতালি মাধ্যম চালু হয়েছে। একটি ঘরে সাঁওতালি মাধ্যমের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হয়। ওই পাঁচটি ক্লাসের পড়ুয়ারা একসঙ্গে বেঞ্চিতে বসে। ওই ঘরটিই আবার প্রধান শিক্ষকের অফিস ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাশের ঘরে বাংলা মাধ্যমের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস হয়। বারন্দায় বেঞ্চি পেতে ও মেঝেতে বাংলা মাধ্যমের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ারা বসে। বারন্দায় একদিকের মেঝেতে সার দিয়ে বসে শিশু শ্রেণির পড়ুয়ারা।

স্কুলের বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক অমলেন্দু দাস, সুশোভন দাস, সোনালি ভুঁইয়া-রা একযোগে জানান, তাঁরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। কিন্তু পড়ুয়াদের মনঃসংযোগে সমস্যা হচ্ছে। সাঁওতালি মাধ্যমের সম্বল বলতে পার্শ্বশিক্ষক সিরু মুর্মু। প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ মুর্মু বাংলা মাধ্যমের হলেও সাঁওতালি ভাষায় পড়াতে পারেন। তাঁরও বক্তব্য, নিরুপায় হয়েই এভাবে ক্লাস নিতে হচ্ছে। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়া ধর্মেন্দ্র খিলাড়ি, অতনু খিলাড়ি, কিংবা সাঁওতালি মাধ্যমের পড়ুয়া ফুরগাল মুর্মুরাও বলছে, ‘‘এ ভাবে তাদের পড়াশোনা করতে খুবই অসুবিধা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shortage of classroom
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE