সরকারি হাসপাতালে নিখরচাতেই রোগীর রক্ত পরীক্ষা হওয়া উচিত। কিন্তু বহির্বিভাগে দেখাতে আসা একাংশ রোগীকে ভুল বুঝিয়ে টাকা নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।
বেসরকারি হাসপাতালে অতিরিক্ত বিল, অপ্রয়োজনে হাজারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সর্বোপরি রোগীদের হয়রানি রুখতে কড়া হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রবণতায় রাশ টানতে সম্প্রতি বিধানসভায় বিলও পাশ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই সামনে আসছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোর নানা গাফিলতি। আর টাকা নিয়ে রক্ত পরীক্ষার অভিযোগ তো একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের জঙ্গলমহলের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে!
এই মর্মে রোগীর পরিজনেদের অভিযোগ জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পৌঁছতেই শোরগোল পড়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনীকুমার মাঝি বলেন, “অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” টাকার বিনিময়ে রক্ত পরীক্ষার এই চক্রে বিক্রম অগ্রবাল নামে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জড়িত বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারই ওই চিকিত্সকের কাছে জবাব তলব করেছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও বিক্রমবাবুর দাবি, “আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। এর পিছনে কোনও অসাধু চক্র রয়েছে।”
ঘটনাটি ঠিক কী?
ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সোমবার গোপীবল্লভপুর ১-এর বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন মোট ৬ জন। গোপীনাথ সাহু, সমীর কামিল্যা, রবীন দাসদের অভিযোগ, বিক্রম অগ্রবাল নামে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ওই চিকিত্সক রোগীদের নানা ভাবে ভুল বুঝিয়ে নিজেই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করছেন। পরে পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে ধরিয়ে এক-দু’হাজার টাকা নিচ্ছেন। ওই চিকিৎসক নিজে রোগীদের ওষুধ দিয়ে তার বিনিময়েও টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এমন গুরুতর অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন গোপীবল্লভপুর ১-এর বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী। তিনি সঙ্গে সঙ্গে এই অভিযোগপত্র ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনীবাবুর কাছে পাঠিয়ে দেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো এখন সরকারি হাসপাতালে সব পরিষেবাই ‘ফ্রি’-তে পাওয়ার কথা। প্রত্যন্ত এলাকায় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঝাঁ চকচকে ভবনও গড়ে উঠেছে। কিন্তু সেখানে যদি এমন চক্র চলে, তাহলে সাধারণ মানুষ কার উপর ভরসা করবেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্য জেলার এক কর্তাও মানছেন, “এর ফলে সরকারি হাসপাতালের উপরে সাধারণ মানুষের ভরসা কমবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy