সপ্তাহের শুরুতেই এক মদ্যপ প্রধান শিক্ষক গড়াগড়ি দিয়েছিলেন স্কুলের সামনে। সেটা পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার ঘটনা। এ বার আর এক মদ্যপ শিক্ষক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে চিকিৎসককে মারধর করলেন, অকারণে। তিনি তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ওই রাতে সর্পদষ্ট হন স্থানীয় রামপুর গ্রামের স্বপন মাইতি। তাঁকে এড়াশাল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক নারায়ণ কুইলি চিকিৎসা শুরু করেন। রোগীর পরিবারকে অভয় দিয়ে জানান, সাপটি বিষধর ছিল না। চিন্তার কিছু নেই। স্বপনবাবুকে অবশ্য সারারাত হাসপাতালেই রাখা হয়েছিল। রাত ১১টা নাগাদ স্বপনবাবুর পরিচিত পূর্ণেন্দু দাস স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় একটি হাইস্কুলের শিক্ষক পূর্ণেন্দুবাবু অভিযোগ তোলেন, স্বপনবাবুর চিকিৎসায় গাফিলতি হচ্ছে। এ সময় নিজের কোয়ার্টার থেকে বেরিয়ে আসেন চিকিৎসক নারয়ণ কুইলি। তাঁর উপর চ়ড়াও হন পূর্ণেন্দু। অভিযোগ বছর পঞ্চান্নর নারায়ণবাবুর বুকে একের পর এক ঘুষি মারেন তিনি। ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই চিকিৎসক। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপস্থিত অন্য রোগীর পরিজনেরা এসে চিকিৎসককে উদ্ধার করেন।
অথচ, চিকিৎসায় গাফিলতি বা অন্য কোনও অভিযোগই করেননি স্বপনবাবুর পরিবার। শুক্রবার সকালে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছেন তিনি। ঘটনার পর থেকেই পলাতক পূর্ণেন্দু। তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত চিকিৎসক। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রানা দাম বলেন, ‘‘নারায়ণবাবুর শারীরিক অসুস্থতাও রয়েছে। তাঁর উপর এ ভাবে আক্রমণের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’’
পূর্ণেন্দুবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘পূর্ণেন্দুবাবু জানিয়েছেন ওই রাতে একাধিক সাপে কাটা রোগী এসেছিলেন। কিন্তু চিকিৎসক ছিলেন না। তা বলতে গেলে ওই চিকিৎসক তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’’ পূর্ণেন্দুবাবু কি তৃণমূলের কর্মী? সে কথা অস্বীকার করেছেন অমিয়বাবু। তাঁর দাবি, পুলিশকে যথাযথ তদন্তের জন্য বলেছেন তিনি। রাজ্যের তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচারর্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি অনুপ ভট্টাচার্য অবশ্য বলেছেন, ‘‘পূর্ণেন্দুবাবু আমাদের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। খোঁজ নিয়ে দেখেছি ওই অভিযোগ ঠিক নয়।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy