Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মশার চরিত্র বদল, চিন্তা সংক্রমণের পদ্ধতি নিয়ে

মাত্র দু’মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০। ম্যালেরিয়া জাঁকিয়ে বসেছে ঝাড়গ্রামে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ম্যালেরিয়ায় গুরুতর অসুস্থ ১১ জন চিকিৎসাধীন। জীবানু বাহক মশার চরিত্র বদল নিয়ে চিন্তায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

মাত্র দু’মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০। ম্যালেরিয়া জাঁকিয়ে বসেছে ঝাড়গ্রামে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ম্যালেরিয়ায় গুরুতর অসুস্থ ১১ জন চিকিৎসাধীন। জীবানু বাহক মশার চরিত্র বদল নিয়ে চিন্তায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।

দফতর সূত্রের খবর, মার্চ ও এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ১০২ জন। গত কয়েক দিনে শুধু জামবনি ব্লকেই মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। অন্য একটি বিষয় নিয়েও উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য কর্তারা। সম্প্রতি জামবনি ব্লকে একটি বার্ষিক উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসেছিলেন। বহিরাগতের মাধ্যমে মশা বাহিত রোগটি ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বছরও ওই উৎসবের পরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে জামবনিতে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তা বাড়াচ্ছে ম্যালেরিয়ার বাহক মশার চরিত্র। এখন গ্রীষ্মেও মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। তবে তা জঙ্গলে।

সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি জানাচ্ছেন, প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, প্রচণ্ড গরমে লোকালয়ে মশার দেখা মিলছে না। অথচ, জঙ্গলে ডালপাতা কুড়োতে গিয়ে কিংবা গরু চরাতে গিয়ে মশা বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা।

স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের খবর, কয়েকবছর আগে পতঙ্গবিদদের একটি দল বেলপাহাড়িতে সমীক্ষা করে জানিয়েছিল, সামান্য জলেই এখন মশার লার্ভা বেড়ে উঠছে। কালবৈশাখীর পর বৃষ্টির জল জমছে জঙ্গলের আনাচে কানাচে। পাখির বাসা, গাছের কোটরের জমে থাকা জলেই বংশবিস্তার করছে মশা। জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিশেষজ্ঞ দল এ ব্যাপারে জঙ্গলমহলে সমীক্ষা করতে আসবে।

সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচার করতেও উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, জেলার পাঁচটি ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে প্রচারপত্র পাঠাবে স্বাস্থ্য দফতর। জামবনি, বেলপাহাড়ি, লালগড়, গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম ব্লকের সব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও প্রচারপত্র পাঠানো হচ্ছে। উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে এলাকার প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল গুলিতে প্রচারপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে। স্কুলে প্রার্থনা-সঙ্গীতের পরে পড়ুয়াদের দিয়ে সচেতনতা-প্রচারপত্র পাঠ করানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির কাছে আবেদন জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।

প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটই মূল সমস্যা। সে কারণেই সরকারি মশারি পেয়েও ব্যবহার করতে চান না তাঁরা। জ্বর হলে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না গিয়ে হাতুড়েকে দেখান অথবা, বাড়িতে রোগীকে রেখে টোটকা চিকিৎসা করেন। জঙ্গলেও যে মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হতে পারে, সে ব্যাপারে অনেকের কোনও ধারণা নেই। প্রশাসনের দাবি, স্কুল পড়ুয়ারা সচেতন হলে তাদের পরিবারের সদস্যদের সচেতন করার কাজটি অনেক সহজ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mosquito
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE