Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
খড়্গপুরে নেই ‘মেটাল ডিটেক্টর ডোর’-ও

স্টেশনে বালাই নেই তল্লাশির, বিপন্ন নিরাপত্তা

ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বাসিন্দা আইআইটি-র মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক ছাত্র হামিদ রাজা খড়্গপুর স্টেশন দিয়েই বাড়িতে যাতায়াত করেন। স্টেশনে ঢোকা বা বেরনোর পথে কোনও তল্লাশির ব্যবস্থা নেই দেখে হতবাক হামিদ।

অরক্ষিত: উপরে, খড়্গপুর স্টেশনের প্রবেশপথে বসে রয়েছেন দুই রক্ষী। যদিও তল্লাশির চালানোর বালাই নেই।

অরক্ষিত: উপরে, খড়্গপুর স্টেশনের প্রবেশপথে বসে রয়েছেন দুই রক্ষী। যদিও তল্লাশির চালানোর বালাই নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
Share: Save:

বোগদায় স্টেশনের মূল প্রবেশপথে রক্ষীর দেখা নেই। অবাধে ঢুকছেন যাত্রীরা। ফুটব্রিজের তলায় চেয়ারে বসে থাকেন নিধিরাম সর্দার রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) দুই জওয়ান। অভিযোগ, স্টেশন চত্বরে দেখা মেলে না আরও কোনও আরপিএফ জওয়ানের। ফুটব্রিজ, সাবওয়েও অরক্ষিত। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের গুরুত্বপূর্ণ এ-ওয়ান স্টেশন খড়্গপুরে নিরাপত্তার এমনই হাল।

রাজ্য থেকে দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতগামী অধিকাংশ ট্রেন এই স্টেশন দিয়েই যাতায়াত করে। প্রতিদিন গড়ে ২১ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন খড়্গপুর দিয়ে। দিনে গড়ে ১৬ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। হাওড়া-খড়্গপুর শাখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খড়্গপুর স্টেশনকে আগেই এ-ওয়ান স্টেশনের তকমা দিয়েছে রেল। যদিও স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বাসিন্দা আইআইটি-র মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক ছাত্র হামিদ রাজা খড়্গপুর স্টেশন দিয়েই বাড়িতে যাতায়াত করেন। স্টেশনে ঢোকা বা বেরনোর পথে কোনও তল্লাশির ব্যবস্থা নেই দেখে হতবাক হামিদ। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের বিভিন্ন বড় স্টেশনে ঢোকা-বেরনোর পথে মেটাল ডিটেক্টর, স্ক্যানার দিয়ে রেলযাত্রীদের ব্যাগ পরীক্ষা করতে দেখেছি। কিন্তু খড়্গপুরে এ সব কোনওদিন দেখিনি।’’

সাবওয়ের প্রবেশপথেও নেই কোনও নজরদারি। নিজস্ব চিত্র

শহরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার বীরেন মাইতির কথায়, “যে কেউ খড়্গপুর স্টেশনে ঢুকে রাখতে পারেন। এত বছরেও এই স্টেশনের চারিদিকে সীমানা প্রাচীর দেওয়া হল না। যে যেখান দিয়ে পারছেন স্টেশনে ঢুকছেন-বেরোচ্ছেন। এ বিষয়ে রেলের ভাবা উচিত।” পাঁশকুড়ার বাসিন্দা অশিস দে-ও বলছেন, “স্টেশন চত্বরে রেল সুরক্ষা বাহিনীকে মাঝে মধ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখি। কড়া তল্লাশি চালাতে কখনও দেখিনি।”

রেলের অবশ্য স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ হেলদোল নেই। স্টেশনে ঢোকা-বেরনোর পথে এখনও কোনও ‘মেটাল ডিটেক্টর ডোর’, ‘স্ক্যানার’ বসানো হয়নি। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি আরপিএফ বুথ রয়েছে। বাকি প্ল্যাটফর্মগুলিতে কোনও আরপিএফ বুথও নেই। স্টেশনে অপরাধের ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসে যাত্রীকে ছুরি দেখিয়ে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করতে গিয়ে আরপিএফের হাতে ধরা পড়ে ৭ জন দুষ্কৃতী। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে স্টেশনে লিফ্‌ট, এসকালেটর বসিয়েছে রেল। তাহলে নিরাপত্তা নিয়ে কেন এত উদাসীনতা?

রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল সেফটি কমিশনার অশোককুমার রায় বলেন, “আমাদের একটি মেটাল ডিটেক্টর ডোর ছিল। সেটি বিকল। নতুন মেটাল ডিটেক্টর ডোর আসবে। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণ যাত্রীদের ব্যাগ পরীক্ষা করতে গেলে অশান্তি হতে পারে। তাই আমরা সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আটক করে তল্লাশি চালাই। ৮ জন আরপিএফ জওয়ান সবসময়ে স্টেশনে ঘুরছেন। আমাদের কর্মীরও অভাব রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE