অরক্ষিত: নিরাপত্তা বলতে ফুট আটেকের পাঁচিল আর একটি তালা। মহকুমা হাসপাতালের মর্গ। —নিজস্ব চিত্র
রাজ্য জুড়ে স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রীষ্মকালীন রক্তের সঙ্কট হোক বা সরকারি হাসপাতালে দালাল রাজত্বের অবসান— তিনি হস্তক্ষেপ করেছেন। অথচ, রাজ্যের অনেক হাসপাতালে মতো কাঁথি মহকুমা হাসপাতালও ভুগছে নিরাপত্তাহীনতার অসুখে।
মাসখানেক আগে রাতের অন্ধকারে হাসপাতালের মর্গের মধ্যে ঢুকে কে বা কারা এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের মৃতদেহ বাইরে নিয়ে এসেছিল৷ ময়নাতদন্তের জন্য ওই দেহ রাখা ছিল মর্গের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে৷ সকালবেলা ডোম এসে মর্গের বাইরে দেহটি দেখতে পান৷ কিন্তু কেন এমন করা হল, কী উদ্দেশ্যে, কে বা কারা এমন দুঃসাহসিক কাণ্ড ঘটালো, তা আজও ‘রহস্য’। পুরোপুরি অন্ধকারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও৷ মর্গের ভিতরে বা বাইরে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই৷ নেই কোনও নিরাপত্তা রক্ষীও। ফলে সম্পূর্ণ অরক্ষিত লাশকাটা ঘরটি।
আবার মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্কে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের কথা কারও অজানা নয়৷ কিন্তু সেখানেও সেই সমস্যা। নজরদারি নেই, প্রমাণের অভাবে কাউকে ধরাও যায় না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের৷ মহকুমা হাসপাতালের আউটডোর বিভাগ চলে দু’টি জায়গায়। একটি হাসপাতাল চত্বরের মধ্যে নতুন ভবনে৷ আর একটি দেড় কিলোমিটার দূরে শহরের মধ্যে স্কুল বাজার এলাকায়৷ দু’জায়গাতেই প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী আসেন৷ স্কুল বাজারের আউটডোরে আবার রোগীদের বিক্ষোভ রোজের ঘটনা৷ সেখানে অভিযোগ, কখনও চিকিত্সকদের দেরিতে আসা নিয়ে, কখনও স্বাস্থ্য কর্মীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে৷ আউটডোরের অনেকখানি রাশ মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের হাতে৷ তাই, রোগীর পরিজনেরা দাবি করেন, নজরদার ক্যামেরা ও নিরাপত্তারক্ষী থাকাটা জরুরি৷
হাসপাতাল রেজিস্টার দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায় রোগী ভর্তি হন, কিন্তু তাঁদের ছাড়া পাওয়ার তথ্য নেই৷ তবে কি তাঁরা নিখোঁজ হয়ে যান?
কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেন না সে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, আয়াদের টাকা না দেওয়ার জন্য লুকিয়ে পালিয়ে যান অনেকে৷ তবে মূল প্রবেশ পথে সিসি ক্যামেরা বসানোয় সেই প্রবণতা রোধ করা গিয়েছে।
তবে রোগীর পরিজনেদের অভিযোগ, মূল হাসপাতাল ভবনের জরুরি বিভাগের সামনে বা প্রবেশ পথে কোনও নজরদারি নেই৷ এখানেই অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের অসাধু খপ্পরে পড়েন তাঁরা৷ বহুবার বিক্ষোভও হয়েছে৷ তবু টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের।
প্রসূতি বিভাগে অবশ্য সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কারণ এখানেই এক আয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল শিশু অদল-বদলের। তারপরই দাবি উঠেছিল, আয়াদের নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র দেওয়া হবে৷ কিন্তু প্রসূতি বিভাগ ও শিশু বিভাগে সিসি ক্যামেরা বসিয়েই দায় সেরেছেন কর্তৃপক্ষ৷ হাসপাতাল সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী অবশ্য সব অভিযোগ মেনে নিয়েছেন৷ তিনি জানান, “হাসপাতালের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মোট ১১টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে৷ বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা থেকে ১০ জন নিরাপত্তারক্ষীও নিয়োগ করা হয়েছে৷ কিন্তু তা যথেষ্ট নয়৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy