Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
কলেজে দুর্নীতি, হাইকোর্টে স্ত্রী

পদ হারাচ্ছেন যুবনেতা স্বামী

মণিকা মাঝিমণ্ডল নামে ওই মহিলার স্বামী সুদীপ মণ্ডল আবার যুব তৃণমূল সহ-সভাপতি। তাই মামলার কথা চাউর হতেই অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল। এ বার ওই তৃণমূল নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল দল।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

কলেজে কর্মী নিয়োগে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ঘাটাল কলেজেরই এক অস্থায়ী কর্মী। মণিকা মাঝিমণ্ডল নামে ওই মহিলার স্বামী সুদীপ মণ্ডল আবার যুব তৃণমূল সহ-সভাপতি। তাই মামলার কথা চাউর হতেই অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল। এ বার ওই তৃণমূল নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল দল।

ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “দলে থেকে দলবিরোধী কথাবার্তার জন্য সুদীপ মণ্ডলকে সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁকে ঘাটাল শহর কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য শহর কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” যদিও দিলীপবাবুর জানিয়েছেন, যে কেউ মামলা করতেই পারে। কলেজে নিয়োগের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে কেন সুদীপবাবুকে সরানোর সিদ্ধান্ত হল?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, “দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সুদীপ দলের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছিলেন। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতৃত্ব। এমনকী যুব সহ-সভাপতির পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়ার জন্য যুব সভাপতিকে আবেদন জানানো হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য প্রাথমিক ভাবে বলেছেন, “বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত কিছু জানি না। খোঁজ নেব।” একই সুর যুব নেতা রমাপ্রসাদ গিরিরও।

কলেজ সূত্রের খবর, সম্প্রতি ঘাটাল কলেজে ১০জন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। সে জন্য গত বছর বিজ্ঞপ্তি জারি করেন কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই নিয়ম মেনে আবেদন করেছিলেন কলেজের অস্থায়ী কর্মী মণিকা মাঝি মণ্ডল। চলতি বছরের মার্চে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। সূত্রের খবর, কর্মী নিয়োগের পরেই দলবাজির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করে সিপিএম। বিষয় থিতিয়ে যাওয়ার আগেই ফের তৃণমূল নেতারই স্ত্রী সরাসরি হাইকোর্ট মামলা করায় ফাঁপড়ে পড়েছেন
তৃণমূল নেতৃত্ব।

মণিকাদেবীর দাবি, “সরকারি নিয়মকানুকে তোয়াক্কা না করেই কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। সুবিচার চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছি।”

কলেজের টিচার-ইন-চার্জ লক্ষ্মীকান্ত রায় অবশ্য স্পষ্ট বলেছেন, “নিয়োগে কোনও অনিয়ম নেই।” ঘাটালের বিধায়ক ও কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি শঙ্কর দোলই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

সুদীপ মণ্ডল আবার বলেন, “আমি স্ত্রীর পাশেই ছিলাম। এখনও থাকব।” দলীয় সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সুদীপবাবুর সাফাই, “আমাকে এখনও কেউ কিছু জানায়নি। তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্যও করব না।”

কলেজ সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে ঘাটাল কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে নিয়োগপত্র পান মণিকা। তিনি এখনও ওই পদে কর্মরত। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তিনি করণিক পদের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ওই পদে নতুন একজনকে নিয়োগ পত্র দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরপরই হাইকোর্টে মামলা করার তোড়জোড় শুরু করেন তৃণমূল যুব
নেতার স্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc Suspend Ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE