নিধন: এভাবেই কেটে ফেলা হয়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র।
যান চলাচলের গতি বাড়াতে পুরনো জাতীয় সড়ক ভেঙে তৈরি হচ্ছে নতুন চার লেনের রাস্তা। গত জানুয়ারি মাস থেকে খড়্গপুরের চৌরঙ্গি থেকে ঝাড়গ্রামের সীমানা এলাকা চিচিড়া পর্যন্ত প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজও শুরু হয়েছে। আর তা করতে গিয়েই কাটা পড়ছে ওই রাস্তার ধারে বেশ কয়েক হাজার গাছ। যার মধ্যে রয়েছে শাল, শিমুল, সেগুন, আম প্রভৃতি। ঝাড়গ্রাম ফরেস্ট ডিভিশনের গুপ্তমনি থেকে চিচিড়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার অংশেই কাটা পড়ছে প্রায় পঁচিশ হাজার গাছ। যার বেশিরভাগটাই বন দফতরের জায়গায়।
পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তর কথায়, ‘‘রাস্তা সম্প্রসারণ হলে গাড়ির গতিবেগ বাড়বে এটা ঠিক। কিন্তু এই ভাবে পরিবেশের ক্ষতি করা হলে জনজীবনে তার কুপ্রভাব পড়বে।’’
বন দফতরের জায়গা যদি উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অধিগ্রহণ করা হয় তাহলে নিয়ম মেনে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের বন দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ে আবেদন করতে হয়। পরে বন দফতরকে অধিগৃহীত জমির দাম বা সমপরিমাণ জমি দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ক্রমে। আর বন দফতরের জমির যে গাছ কাটা পড়ে তার পাঁচগুণ গাছ লাগিয়ে দিতে হয় সেই সংস্থাকে। তা না করা হলে বন দফতরকে গাছ লাগানো এবং তার দেখাশোনার জন্য টাকা দিতে হয়।
ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ) দেশের প্রায় সমস্ত রাস্তা তৈরির কাজ দেখাশোনা করে। সংস্থার এক কর্তা জানান, চলতি বছরের গোড়ায় এই কাজ শুরু হয়েছে। আড়াই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। খড়্গপুরের চৌরঙ্গি থেকে চিচিড়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার রাস্তায় সাহাচক, মানিকপাড়া, লোধাশুলি ও ফেঁকোঘাটের মোড়ে চারটি ফ্লাইওভার-সহ আটটি ছোট সেতু ও বেশ কয়েকটি আন্ডারপাস থাকবে। এর জন্য জায়গাও দরকার প্রচুর। বন দফতরের কাছ থকে যে জায়গা নেওয়া হয়েছে তার জন্য তারা বিকল্প জায়গাও পেয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া জঙ্গলে রাস্তা করতে গেলে গাছ কাটা পড়বেই। যে সব গাছ কাটা পড়েছে সে বাবদ গাছ লাগানোর টাকা ও আগামী দশ বছর তা দেখাশোনার টাকাও বন দফতরকে দেওয়া হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম জেলার ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, ‘‘বন দফতরের জমি ও সাধারণ জমি মিলিয়ে হাজার কুড়ি গাছ কাটা পড়বে। মানিকপাড়া, গিধনি ও পড়িহাটিতে ৮৬ হেক্টর এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ। হেক্টর প্রতি ১৬০০ গাছ লাগানো হবে। বরাদ্দ এসে গেলেই বর্ষার মরসুমে সব গাছ লাগিয়ে ফেলতে পারব বলে আশা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy