বছর দু’য়েক আগের বিস্ফোরণ থেকেও শিক্ষা নেয়নি পুলিশ। খাস মেদিনীপুর শহরে কোতোয়ালি থানা থেকে শ’পাঁচেক মিটার দূরেই চলত বেআইনি বাজির কারবার। ফের ওই একই বাড়িতে বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণে মৃত্যু হল দুই মহিলার। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই শহরের বিবিগঞ্জে শেখ শাহাজাদার বাড়িতে রমরমিয়ে চলে বাজি ব্যবসা। বাজির আড়ালে চলে বোমা বাঁধাও। যদিও কারবার বন্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
ওই দিন সন্ধ্যায় ধুনুরি বস্তির শেখ শাহজাদার বাড়িতেই বিস্ফোরণ হয়। দুই মহিলা ঝলসে যান। মমতাজ বেগম ও মামনি বিবিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। মামনি সম্পর্কে শাহজাদার স্ত্রী। শেখ শাহজাদাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই ঘরে বাজি মজুত ছিল। স্থানীয়দের অবশ্য অভিযোগ, ওখানে বাজি নয়, বোমা তৈরি হত।
২০১৫-এর ৬ মে পিংলার ব্রাহ্মণবাড় গ্রামে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ন’জন নাবালক-সহ ১৩ জনের। তখন গ্রামের কারখানায় বাজির আড়ালে আদতে বোমা তৈরি হত বলে অভিযোগ তুলেছিল স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ সে অভিযোগ মানেনি। এ দিনের ঘটনাতেও স্থানীয়দের দাবি, ধুনুরি বস্তির ওই বাড়িতে গত দু’তিন দিন ধরেই চলছিল বোমা বাঁধার কাজ। প্রমাণ লোপাট করতে বিস্ফোরণের পরই গভীর রাতে ওই বাড়িতে থাকা সব উপকরণ পুলিশ সরিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের অবশ্য দাবি, ওই বাড়ি থেকে বাজি তৈরির উপকরণ ছাড়া আর কিছু মেলেনি।
ধুনুরি বস্তির ওই বাড়িতে বেশ কয়েকবার বিস্ফোরণ ঘটেছে। দু’বছর আগেও বিস্ফোরণে এক যুবক জখম হন। তার পরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মক্করের সংক্ষিপ্ত উত্তর, “ওই বাড়িতে বাজি মজুত ছিল। তৈরি হত না। তদন্তে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ঘটনাস্থলে কি বোমা তৈরি হতো? এই প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি।
জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, “ওখানে যে এখন থেকেই বাজি মজুত করা শুরু হয়েছে সেই খবর ছিল না! থাকলে মজুত বাজি বাজেয়াপ্ত করা হত।” শাহজাদার এক নিকট আত্মীয়েরও বাজির ব্যবসা রয়েছে। ওই ব্যবসা কি বৈধ? অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মক্কর বলছেন, “বৈধ না অবৈধ তদন্তে তাও দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy