Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
দুই শহরেই আতসবাজির আড়ালে বিকোচ্ছে দেদার শব্দবাজি

নাগালেই শট্স, চকোলেট বোম

দীপাবলির আগে খড়্গপুর শহর জুড়ে এমনই নানা কথা কানে আসছে। আতসবাজির দোকানের আড়ালে গোপনে চলছে নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবসা। শুধু গলি নয়, গোলবাজার-খরিদার মতো বিভিন্ন বাজার এলাকায় আতসবাজির বাজির দোকানেই মিলছে শব্দবাজি।

পসরা: বাজির দোকানে ভিড় খড়্গপুরে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

পসরা: বাজির দোকানে ভিড় খড়্গপুরে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৭
Share: Save:

বাজির পসরা সাজিয়ে বসেছে দুই কিশোর। আশেপাশে নজর রাখছে তাদেরই একজনের বাবা। বাইক আরোহী এক যুবক দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল, ‘‘চকোলেট বোম পাব তো?’’ এক কিশোরের জবাব, ‘‘না, সব ছোটদের বাজি।’’ যুবকের পাল্টা প্রশ্ন, “বড়দের বাজি তাহলে কোথায় পাব!” তখন অন্য কিশোরের মন্তব্য, ‘‘বড়দেরও আছে। বললে ভিতর থেকে এনে দেবে। যা মাল এনেছি ভাল শব্দ হবে।’’

দীপাবলির আগে খড়্গপুর শহর জুড়ে এমনই নানা কথা কানে আসছে। আতসবাজির দোকানের আড়ালে গোপনে চলছে নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবসা। শুধু গলি নয়, গোলবাজার-খরিদার মতো বিভিন্ন বাজার এলাকায় আতসবাজির বাজির দোকানেই মিলছে শব্দবাজি। পরিচিত মুখ দেখলেই ভিতর থেকে আনা হচ্ছে গাছবোমা, চকোলেট বোমার মতো প্যাকেট-প্যাকেট নিষিদ্ধ শব্দবাজি। আর দোকানে প্রকাশ্যেই রাখা হচ্ছে ‘শট্‌স’ নামে হাওয়াই বাজি। বিভিন্ন বাড়িতে গাছবোমা, চকোলেট বোমা তৈরিও করা হচ্ছে।

পুলিশ অবশ্য ধরপাকড় চালাচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় শহরের পাঁচবেড়িয়ায় হানা দিয়ে সুকুমার দাস নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। সে নিজের বাড়িতেই মশলা এনে শব্দবাজি তৈরি করছিল। বাড়ি থেকে ১৪কেজি ছোট গাছবোমা, ১০টি বড় গাছবোমা, ২ হাজার নিষিদ্ধ লঙ্কা পটকা ও বিপুল পরিমাণ বারুদ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গোলবাজারের বাজি ব্যবসায়ী শেখ কামালউদ্দিন অবশ্য বলেন, “গোপনে হয়তো কেউ কেউ শব্দবাজি বিক্রি করছে। কিন্তু আমরা প্রতিষ্ঠিত বাজি ব্যবসায়ী। আমরা এ সব বাজি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।’’

বাজি ব্যবসায়ীরা স্বীকার না করলেও শব্দবাজি যে বিক্রি হচ্ছে তার প্রমাণ মিলছে রাত আটটার পরে। ভবানীপুর মাঠপাড়া, সুভাষপল্লি, ঝাপেটাপুর, মালঞ্চ, নিউ সেটলমেন্ট, নিমপুরা, তালবাগিচা, ইন্দা-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় শব্দবাজির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। খরিদার এক বাজি বিক্রেতা মানছেন, “সত্যি বলতে দোকানে শব্দবাজি রেখে বিক্রি করছি না। কিন্তু ক্রেতাদের চাহিদা মতো এক-দু’পিস দিতে হচ্ছে।’’

এই অবস্থায় কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে শব্দ-তাণ্ডবের আশঙ্কায় খড়্গপুরবাসী। সুভাষপল্লির বাসিন্দা আশিস মাইতি বলেন, “কালীপুজোর সময়ে কী হবে জানি না। কারণ, গোপনে তো শব্দবাজি প্রতিবারই বিক্রি হয়।’’

খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীর অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি। ধরপাকড় চলছে। আবারও খোঁজখবর নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE