কোনও প্রয়োজনে থানায় গিয়ে দুঁদে পুলিশ আধিকারিকের বিশাল বপু দেখে হয়তো হেসেছেন মুখ টিপে। বলেছেন, এই তো আদর্শ পুলিশ। সেই ‘আদর্শ’ মেনে নিয়েই সিনেমা, ধারাবাহিকে ভিলেন পুলিশের চরিত্রে নেওয়া হয় মোটাসোটা, ভুঁড়িওয়ালা কোনও কমেডিয়ানকে।
তবে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কিন্তু নড়েচড়ে বসছে। এমনিতেই রাজ্য জুড়ে পুলিশের ‘দশা’ নিয়ে ব্যঙ্গ করতে ছাড়ছেন না বিরোধী রাজনৈতিক নেতা থেকে আম জনতা—কেউই। এমন পরিস্থিতিতে গোটা পুলিশ মহল যে বেজায় চাপে, সে কথা বলাই বাহুল্য। তাই নিজেদের শরীর ও মন চাঙ্গা রাখতে এ বার যোগাসনে মন দিতে চাইছেন তাঁরা। তবে এমনি এমনি নয়। রীতিমতো সরকারি নির্দেশিকা এসেছে কেন্দ্র থেকে। সেই অনুযায়ী নিয়মিত যোগচর্চার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। এই জন্য জেলায় দু’জন যোগ প্রশিক্ষকও নিয়োগ করা হবে।
জানা গিয়েছে আগামী একমাসের মধ্যেই চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে যোগ প্রশিক্ষকদের। জেলার সাধারণ পুলিশ কর্মী থেকে শুরু করে উঁচু তলার আধিকারিক— সকলকেই যোগ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিভিন্ন থানা, মহকুমা এবং জেলা সদরে রুটিন করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান পুলিশ, ‘‘রাত জাগা, অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া, রোদ-ঝড়-জল— সব রকমের সমস্যার মধ্যেই কাজ করতে হয় কর্মীদের। তাছাড়া দীর্ঘদিন বাড়ি ছেড়ে দূরে কর্মস্থলে থাকার জন্য মানসিক চাপ তৈরি হয়। তাই শরীর ভালো রাখতে এবং মানসিক চাপ কমাতে যোগ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ কিন্তু কেমন হবে সেই রুটিন, দু’হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কী ভাবে ব্যবস্থা করা হবে প্রশিক্ষণের সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি কর্তারা। পুলিশ সুপার অবশ্য বলেন, প্রশিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেলে, তাঁদের পরামর্শ মতোই ব্যবস্থা করা হবে।
তাঁর আশা এর ফলে পুলিশ কর্মীরা আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন। মাস খানেকের মধ্যেই প্রশিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলে তিনি জানান। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মাস তিনেক আগেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ এসেছে যোগ প্রশিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরে বিভিন্ন থানা এবং পুলিশ লাইন-সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদে কর্মরত প্রায় দু’হাজার পুলিশকর্মী এবং আধিকারিক। তাঁদের সকলের জন্যই যোগ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গিয়েছে, এই উদ্যোগ প্রথম নয়। এর আগেও পুলিশের মানসিক চাপ কমাতে যোগচর্চার ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ। তবে তা নিয়মিত ছিল না। জেলা পুলিশের কর্তাদের আশা এ বার দু’জন প্রশিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেলে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হবে। জেলা পুলিশের এক এএসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘এতে আমাদের উপকার হবে। অনিয়মের ফলে নানা রোগ দেখা দেয়। অথচ কাজের চাপ কমে না। নিয়মিত যোগচর্চা হলে মন ভালো থাকবে, কাজেও গতি আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy