Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ট্রেন দেরিতেই চলছে, ক্ষোভ

রেলযাত্রীদের অভিযোগ, লোকাল ট্রেন তো বটেই, মঙ্গলবার ডাউন স্টিল এক্সপ্রেস, আপ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, আপ গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের মতো সুপারফাস্ট ট্রেনও দেরিতে খড়্গপুর স্টেশনে ঢুকেছে।

ভোগান্তি: খড়্গপুর স্টেশনের আগে দাঁড়িয়ে ট্রেন। ধৈর্য হারিয়ে ট্রেন থেকে নেমে হেঁটেই স্টেশনের দিকে যাচ্ছেন যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: খড়্গপুর স্টেশনের আগে দাঁড়িয়ে ট্রেন। ধৈর্য হারিয়ে ট্রেন থেকে নেমে হেঁটেই স্টেশনের দিকে যাচ্ছেন যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪০
Share: Save:

‘ইলেকট্রনিক্স রুট ইন্টারলকিং’ ব্যবস্থা চালু হলে ট্রেনের গতি বাড়ার কথা শুনিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। নতুন ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর গত সোমবার ট্রেন সময়ে চলায় অনেক যাত্রীই ভেবেছিলেন, এ বার হয়তো দুর্ভোগের দিন শেষ। একদিন যেতে না যেতেই মঙ্গলবারই দেরিতে ট্রেন চলার অভিযোগ ওঠায় আশাহত অনেকেই।

রেলযাত্রীদের অভিযোগ, লোকাল ট্রেন তো বটেই, মঙ্গলবার ডাউন স্টিল এক্সপ্রেস, আপ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, আপ গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের মতো সুপারফাস্ট ট্রেনও দেরিতে খড়্গপুর স্টেশনে ঢুকেছে। ওই দিন রাতে টাটানগরগামী স্টিল এক্সপ্রেসও প্রায় ১০ মিনিট দেরিতে খড়্গপুর স্টেশনে পৌঁছেছে। বুধবার পুরুলিয়াগামী রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস খড়্গপুরে ঢুকেছে নির্ধারিত সময়ের থেকে ৭মিনিট দেরিতে।

অনেক প্যাসেঞ্জার ও মেমু ট্রেনও দেরিতে চলার অভিযোগ উঠেছে। এ দিন ঝাড়গ্রাম-সাঁতরাগাছি মেমু ট্রেন কলাইকুণ্ডা স্টেশনের আগে থেকেই দেরি করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ওই ট্রেনেই ঝাড়গ্রাম থেকে মেচেদা যাচ্ছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী শেখ মনজুর আলম। তাঁর অভিযোগ, প্রতিদিন এই ট্রেনেই তিনি অফিসে যান। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে দেখছেন, ট্রেন দেরিতে চলছে। কলাইকুণ্ডার আগে-পরে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। খড়্গপুরে ফেরার পথেও একই সমস্যা।

খড়্গপুরের বাসিন্দা কলকাতার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী পার্থ দাশগুপ্ত নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করেন। পার্থবাবু বলছিলেন, “এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইলেকট্রনিক্স ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে ট্রেন সময়ে চলবে বলে আশা ছিল। কিন্তু এই ব্যবস্থা চালুর পর থেকেই দেখছি প্রতিদিন ট্রেন দেরিতে চলছে।’’ তাঁর দাবি, খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকা-বেরোনোর মুখে ট্রেন দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এটাই কি নতুন ব্যবস্থার সুফল।

শুধু স্টেশনে ঢোকার মুখে ট্রেনের গতি কম থাকাই নয়, খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকার আগে দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগও উঠছে। মেদিনীপুর-খড়্গপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদক জয় দত্তর অভিযোগ, অনেক আশা নিয়ে তাঁদের মতো নিত্যযাত্রীরা ১৬ দিন দুর্ভোগ সহ্য করেছিলেন। ভেবেছিলেন নতুন ব্যবস্থা চালু হলে ট্রেনের গতি বাড়বে। কিন্তু এখন দেখছেন সব ট্রেন দেরিতে খড়্গপুর হয়ে চলাচল করছে। স্টিল এক্সপ্রেসও খড়্গপুরে ঢোকার মুখে নিমপুরায় দাঁড়িয়ে থাকছে।

ট্রেন চলাচলে যে দেরি হচ্ছে তা মানছেন রেল কর্তৃপক্ষও। রেল সূত্রে খবর, খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকা বেরনোর সময় ট্রেনের গতি প্রতি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার রাখা হচ্ছে। যদিও নতুন ব্যবস্থায় ট্রেনের গতি প্রতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কর্মার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “এখন সবে নতুন ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালু হওয়ায় ট্রেনের গতি কম রয়েছে। আগামী ১০-১৫ দিন পরেই ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার করা হবে।” তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে এই ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন। বাইরে থেকে আসা আধিকারিকরাও দেখভাল করছেন। তাই খড়্গপুরে নতুন ব্যবস্থায় কোনও সমস্যা নেই। ট্রেন চলার পথে কোথাও কোনও সমস্যায় হয়তো দেরি হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Train Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE