স্বাতী চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
স্বামী মদ্যপান করায় প্রায়ই বাড়িতে অশান্তি হত বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযোগের তির স্বামীর দিকে। খড়্গপুর গ্রামীণ থানা এলাকার খড়্গপুর-১ ব্লকের ঘাগড়া গ্রামের ওই ঘটনায় মৃতের নাম স্বাতী চক্রবর্তী (৩৪)।
মৃতার শ্বশুর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বাড়িতে সিলিং ফ্যানে গামছা ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় স্বাতীদেবীকে উদ্ধার করা হয়। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে খড়্গপুর-২ ব্লকের খাগরা গ্রাম থেকে আসেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকেরা। ততক্ষণে দেহ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে চলে যাওয়ায় তাঁদের মেয়েকে দেখতে পাননি বলে অভিযোগ মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের। রাতেই মেয়ের স্বামী সুশান্ত চক্রবর্তী-সহ শ্বশুর বাড়ির চারজনের বিরুদ্ধে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার বাবা বলরাম ভট্টাচার্য। এরপরে মৃতার শ্বশুর শিবশঙ্কর চক্রবর্তী, শাশুড়ি গীতা চক্রবর্তী-সহ তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই স্বামীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে দাবি পুলিশের।
বছর পনেরো আগে খড়্গপুর-২ ব্লকের খাগরার বাসিন্দা স্বাতীর সঙ্গে বিয়ে হয় খড়্গপুর-১ ব্লকের ঘাগড়ার বাসিন্দা পেশায় আইআইটি-র হলকর্মী সুশান্ত চক্রবর্তীর। তাঁদের বছর চোদ্দোর একটি ছেলেও রয়েছে। স্বাতীদেবীর বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মদ্যপান করত সুশান্ত। তার প্রতিবাদ করায় বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। ইদানীং শ্বশুরবাড়িতে স্বাতীদেবীকে মারধর করা হত বলেও অভিযোগ। এমন ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় একাধিকবার স্বাতীদেবী বাপের বাড়িতেও চলে গিয়েছিলেন। সমস্যা মীমাংসার পরে ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যেতেন তিনি।
সম্প্রতি ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন স্বাতীদেবী। সেখান থেকে শ্বশুর বাড়িতে ফেরার পরেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ। স্বাতীদেবীর দাদা নিশিকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত শুক্রবার স্বাতী বাড়িতে এসেছিল। তারপরে গত রবিবার ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়। এরপরেই কিছু হয়েছে। আমার বোন আত্মঘাতী হতে পারে না।’’
নিশিকান্তবাবুর অভিযোগ, বোনকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই মর্গে মৃতদেহ নিয়ে চলে যাওয়ার পরে তাঁদের খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জামাইও পলাতক। অবিলম্বে স্বামী-সহ সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন নিশিকান্তবাবু।
এ বিষয়ে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “রাতেই ঘটনার অভিযোগ পেয়ে মামলা রুজু হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যেহেতু প্রায় ১৫ বছর আগে ওনাদের বিয়ে হয়েছে তাই গোটা ঘটনার তদন্তের পরে গ্রেফতারের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy