Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গাছ কাটার প্রতিবাদ করায় অপহরণের চেষ্টা দাসপুরে

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস সাতেক আগে সিপিএম পরিচালিত রানিচক পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ স্থানীয় দরিঅযোধ্যা এবং রানিচক মৌজায় পঞ্চায়েতের নিজস্ব জমিতে থাকা গাছ কাটার ব্যবস্থা করে।

আটক দুই অভিযুক্ত। শুক্রবার নিজস্ব চিত্র

আটক দুই অভিযুক্ত। শুক্রবার নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল     শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৪
Share: Save:

গাছ কাটা ঘিরে গোলমালে এক উপ-প্রধানকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল ঠিকাকর্মীর ছেলের বিরুদ্ধে। দাসপুর-২ ব্লকের রানিচক পঞ্চায়েতের কুমারচকের ঘটনা। শুক্রবার এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে দাসপুর থানায়। তদন্ত শুরু করে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস সাতেক আগে সিপিএম পরিচালিত রানিচক পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ স্থানীয় দরিঅযোধ্যা এবং রানিচক মৌজায় পঞ্চায়েতের নিজস্ব জমিতে থাকা গাছ কাটার ব্যবস্থা করে। নিয়ম মেনে গাছ কাটার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেখানে ইউক্যালিপটাস, মেহগনি সহ নানা রকমের গাছের উল্লেখ ছিল। মোট গাছের সংখ্যা ৪৪২টি। নির্দিষ্ট সংখ্যক গাছের জন্য চার লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবি করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। গাছ কাটার বরাত পান দাসপুর এলাকারই ব্যবসায়ী মোস্তাক আলি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঠিকাদারের হয়ে পুরো বিষয়টি দেখভাল করছিলেন দাসপুর থানার চাঁইপাট সংলগ্ন বাঁকিবাজারের বাসিন্দা রবিয়াল হোসেন। অভিযোগ, গাছ কাটার সময় নিয়মবহির্ভূত ভাবে রবিয়াল বাড়তি কিছু গাছও কেটে নেয়। এই নিয়ে উপপ্রধান সুবীর মণ্ডল-সহ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রবিয়ালের গোলমাল বাধে। যদিও রবিয়ালের দাবি, বাড়তি গাছ কাটার জন্য উপপ্রধান তাঁর কাছে ‘ঘুষ’ নিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় হইচই শুরু হয়।

উপ-প্রধান সুবীর মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘রবিয়াল হোসেনই যেহেতু দেখভাল করছিলেন, তাই আমি তাঁর কাছেই বাড়তি গাছ কাটার কারণ জানতে চাই। এমনকী মামলা করব বলে জানাই। এরপরই আমার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন রবিয়াল। শুধু তাই নয়, আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন।”

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে সুবীরবাবু প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। কুমারচক গ্রামের মণ্ডল পাড়ার কাছে রবিয়ালের ছেলে রহমত আলি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে একটি গাড়িতে বসেছিলেন। সুবীরবাবুর অভিযোগ, “আমি গাড়ির কাছে আসতেই আমাকে টেনে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে ওরা। আমি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তখনই গাড়ি থেকে নেমে চারজন ছুটে পালিয়ে যায়। রবিয়ালের ছেলে রহমত ও গাড়ির চালক গোবিন্দ মান্নাকে লোকজন ধরে ফেলে।” তিনি জানান, ঘটনা জানাজানি হতেই আরও লোকজন জড়ো হয়ে যায়। রহমত আলি তাঁকে অপহরণ করার উদ্দেশ্যের কথা কবুল করে ও তা নিয়ে লিখিত মুচলেকাও দেয়।

খবর পেয়ে এলাকায় যায় দাসপুর থানার পুলিশ। দু’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পঞ্চায়েত প্রধান রিতা সামন্ত বলেন, ‘‘বাড়তি গাছ কাটার প্রতিবাদ করায় উপ-প্রধানকে হুমকি ও অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছিল ওই ঠিকাকর্মীর ছেলে। সমস্ত ঘটনা পুরো থানায় জানিয়েছি। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হবে।” মোস্তাক আলির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

contractor kidnap Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE