সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সে জন্য এখন থেকে ঘর গোছানো শুরু করতে চলেছে তৃণমূল। দলের তরফে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ দেখভালে পৃথক কমিটিও গঠন করা হবে। শনিবার মেদিনীপুরে জেলা তৃণমূলের বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বলে দলেরই এক সূত্রে খবর। কমিটিতে থাকবেন কয়েকজন জেলা নেতা। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ দেখভালের জন্য জেলায় দলের তরফে একটি কমিটি গঠন করা হবে।’’ দলের ওই সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই কমিটি গঠন করা হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই কমিটি গঠন করে তৃণমূলের লক্ষ্য প্রধানত দু’টো। প্রথমত সংগঠনকে মজবুত করা এবং দ্বিতীয়ত দলীয় কোন্দলে রাশ টানা। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সম্মেলন হবে মেদিনীপুরে। ২৭ জানুয়ারি সম্মেলনের প্রস্তুতি বৈঠক হবে চন্দ্রকোনার শ্রীনগরে। ১৭ জানুয়ারি আবার সমবায় সম্মেলন হবে। পঞ্চায়েত সম্মেলনে ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা থাকবেন। থাকবেন দলের বিধায়ক, দলের ব্লক সভাপতিরাও। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাফল্য পেতে একেবারে বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠন মজবুত করতে চায় জেলা তৃণমূল। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী ও মজবুত করার জন্য এবং কঠোর ভাবে সংগঠনকে শৃঙ্খলাপরায়ন ও সুসংগঠিত করার জন্য শনিবারের বৈঠকেই বার্তা দিয়েছেন অজিতবাবু।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন তৃণমূলেরই ‘আধিপত্য’। বেশিরভাগ জেলা পরিষদ, সব পঞ্চায়েত সমিতি, বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত শাসক দলের দখলে। তাও দলের জেলা নেতৃত্ব স্বস্তিতে নেই। কারণ, বুথে বুথে গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। দু’দিন আগে কেশপুরে যুবক খুনে সামনে এসেছে কোন্দল। এই ঘটনায় যে সাতজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে তারাও তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। জেলা তৃণমূলের এক নেতা মানছেন, “দল বেড়েছে। আমাদের সকলকে শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে।” অজিতবাবুর অবশ্য দাবি, “কোথাও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাও আর থাকবে না।’’ পরিস্থিতি দেখে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব সবস্তরের নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও ব্লক-অঞ্চল-বুথ নেতৃত্ব তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে কোনও ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হবে বলে যেন সিদ্ধান্ত না নেন কিংবা প্রতিশ্রুতি না দেন।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা বিরোধী শূন্য হবে বলে দাবি তৃণমূলের। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “নির্বাচনের পরে অন্য কোনও রাজনৈতিক দলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না!” তাঁর মতে, দল ক্ষমতায় থাকলে চাওয়া-পাওয়ার একটা ব্যাপার চলে আসে। যে কিছু পায় না বা প্রত্যাশা মতো পায় না, তার মধ্যে অসন্তোষ আসে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংগঠনের ভিত আরও মজবুত করা প্রয়োজন। মানুষের কাছে গিয়ে যদি বলা যায়, এই সময়ের মধ্যে কী হয়েছে, কী পরিকল্পনা রয়েছে, তাহলে অসন্তোষ অনেকটা কমে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy