Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নেতারাই প্রার্থী, দ্বন্দ্ব মেটাবে কে

তৃণমূলের এক কর্মীর সরস টিপ্পনী, “জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, ব্লক সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকী, ব্লকের কোর কমিটির একাধিক নেতা তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন। প্রত্যেকেই ছুটছেন এখন নিজের জন্য। নিজেকে তো জেতাতে হবে।”

অভিজিৎ চক্রবর্তী
চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৭
Share: Save:

দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা ভোটে লড়ছেন। স্বাভাবিক ভাবেই ভীষণ ব্যস্ত তাঁরা। তাহলে দলের বিবাদ মিটবে কী ভাবে? শাসক দল সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডে তৃণমূলের নীচুতলার কর্মীদের একাংশের মধ্যে ঘুরছে এই প্রশ্ন।

তৃণমূলের এক কর্মীর সরস টিপ্পনী, “জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, ব্লক সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকী, ব্লকের কোর কমিটির একাধিক নেতা তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন। প্রত্যেকেই ছুটছেন এখন নিজের জন্য। নিজেকে তো জেতাতে হবে।”

চন্দ্রকোনা রোডে বিজেপির প্রভাব রয়েছে। এই ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসনের সংখ্যা ১১৫। পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ২১। পঞ্চায়েত স্তরে বেশ কয়েকটি আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। ৬৮টি আসনে আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। কয়েকটি আসনে সিপিএমও প্রার্থী দিয়েছে। ফলে প্রায় সত্তর শতাংশ আসনে বিরোধীদের সঙ্গে টক্কর হবে। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের দু’টি আসনেও লড়াই হবে সমানে সমানে। ইতিমধ্যেই দেওয়াল লিখন থেকে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ শুরু করে দিয়েছে বাম-বিজেপি। বিরোধীরা যখন প্রচারে ব্যস্ত, তৃণমূলের কোন্দল তখনও থামেনি। টিকিট বিলি নিয়ে চাপা অসন্তোষ থেকেই গিয়েছে। তার জেরে ক্ষোভে ফুটছেন শাসক শিবিরের কর্মীরা।

তৃণমূলের নীচুতলার নেতা-কর্মীদের আশা ছিল, জেলা, ব্লক স্তরের নেতারা গ্রামে গ্রামে প্রচারে এলে কিছুটা হলেও কোন্দল সামলানো যাবে। কিন্তু নেতারা নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত থাকায় এলাকায় তাঁদের দেখা মিলছে না। এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, ‘‘নেতারা যদি নিজেদের জেতাতেই ব্যাস্ত হয়ে পড়েন তাহলে দলেরই অন্য প্রার্থীদের প্রচারে আর কখন সময় দেবেন।” জেলা পরিষদের সভাধিপতির নাম করেই ধেয়ে আসছে কটাক্ষ। কেননা উত্তরা সিংহের বাড়ি চন্দ্রকোনা রোডেই। কড়সা পঞ্চায়েতের এক বুথের সভাপতি বলছিলেন, “আগে উনি (উত্তরা) লাল গাড়িতে ঘুরতেন। এখন কালো কাচে ঢাকা নীল বাতি লাগানো গাড়ি করে ঘোরাফেরা করেন। কোনও জনসংযোগ নেই।’’

ওই বুথ সভাপতির কথায়, ‘‘গত পাঁচ বছরে ক্ষমতার শীর্ষে থাকলেও চন্দ্রকোনা রোড কিছুই পায়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দলেরই কর্মীদের একাংশের। এখনও এলাকায় প্রচারে আসছেন না। ফলে কর্মীরা হতাশ।” যদিও উত্তরা সিংহ বলছেন, “শুধু নিজের আসনটুকু নয়। গোটা জেলাতেই আমি প্রচার করছি। চন্দ্রকোনা রোডেও প্রচারও যাব। ভোটের তো এখনও দেরি আছে।” ব্লক সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন,“এলাকায় কোথাও কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। অসন্তোষও নেই। যদি কোথাও সমস্যা থেকে থাকে, প্রচারে গিয়ে মিটিয়ে দেব। ভোটে আমরাই জিতছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC leaders West Bengal Panchayat Election 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE