সপ্তাহ দুয়েক আগের ঘটনা। ভগবানপুর-১ ব্লকের মহম্মদপুর-১ নম্বর পঞ্চায়েতে নির্দল প্রার্থী অন্তঃসত্ত্বা মধুমিতা সামন্ত (ওঝা)-কে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গত ১ মে’র এই ঘটনায় তৃণমূল নেতা পিণ্টু প্রধান-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তারও আগে ২৯ এপ্রিল নদিয়ার শান্তিপুরে বিজেপি প্রার্থীকে না পেয়ে হামলাকারীরা তাঁর ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জা’য়ের উপর অত্যাচার করে। এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত ছিল তৃণমূল। ফের একই ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে। ফের অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।
সোমবার রাতে পটাশপুর-১ ব্লকের গোয়ালদা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা রেখা ধাড়ার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির সমর্থক হওয়ার অপরাধে ওই রাতে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীদের বাধা দিলে তারা রেখা দেবীকে মাটিতে ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটায়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই গ্রামে গিয়ে নিরাপত্তার কারণে আক্রান্ত পরিবারের একটি শিশু, কিশোরী এবং পাঁচজন মহিলা-সহ এগারো জনকে থানায় নিয়ে আসে। বিজেপির অভিযোগ, গ্রামে তাঁদের বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আতঙ্কে গ্রামছাড়া বেশ কিছু বিজেপি সমর্থক। তৃণমূলের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের নেতাকে মুখে গামছা বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার দুপুরে রেখা দেবী বলেন, ‘‘হামলাকারীরা আমায় মাটিতে ফেলে পিঠে বাঁশ দিয়ে মারে। আমার পেটেও বাঁশের বাড়ি মারতে গেলে হাত দিয়ে আটকাই। হাতের উপর বাঁশের বাড়ি পড়ে।’’ তিনি জানান, হামলাকারীরা ভাঙচুর, মারধর করে চলে যাওয়ার পর পুলিশ এসে তাঁর জায়েদের সঙ্গে তাঁকেও থানায় নিয়ে আসে। আজ দুপুর একটার সময় তাঁদের থানা থেকে ছাড়ে। জল ছাড়া কোনও খাবার দেওয়া হয়নি। শরীরের এমন অবস্থায় কষ্ট হচ্ছে। এক মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তার কারণে তিনি বাপের বাড়িতে চলে যাবেন বলে জানান।
বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক স্বপন দত্ত বলেন, ‘‘পায়ের তলায় মাটি সরছে বুঝে তৃণমূলের লোকজন আমাদের কর্মী-সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করছে। ওরা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছে যে অন্তঃসত্ত্বাকেও রেহাই দিচ্ছে না। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করলে কাল, বুধবার রাস্তা অবরোধ করা হবে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, হামলাকারীদের গ্রেফতারের বদলে নিরাপত্তার নামে অন্তঃসত্ত্বাকে রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রেখে হেনস্থা করে।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লজলালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি সেই অমলেন্দু বেরা ভর্তি গোনাড়া হাসপাতালে। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমাদের কর্মীদের সঙ্গে একটা ঝামেলা হয়। সেই খবর শুনে আমি ওই গ্রামে যাই। তখন গোবিন্দ ধাড়া এবং বরেন ধাড়া আমায় গলায় গামছা বেঁধে মারধর করে। পরে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয়। রাতভর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকার পর সকালে জ্ঞান ফিরলে বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘সোমবার রাতে পটাশপুর-১ ব্লকের গোয়ালদা গ্রামে একটা ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তার কারণে ওই পরিবারের মহিলাদের থানায় এনে রাখা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy