Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এত পুলিশ আগে দিল না কেন!

বুধবার তাই সাতসকালে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন সূর্যমণি। গোয়ালতোড়ের বর্গিউতরা প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে বুধবার ভোট হল কড়া পুলিশি প্রহরার মধ্যে।

গোয়ালতোড়ের নগদিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে কড়া পুলিশি পাহারায় চলছে ভোট। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

গোয়ালতোড়ের নগদিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে কড়া পুলিশি পাহারায় চলছে ভোট। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

ভোট দিতে পারেননি সোমবার। বুথে এসেও গোলমালের জেরে তাঁকে ফিরতে হয়েছে ভোট না দিয়েই। বুধবার তাই সকাল সকাল ভোট দিলেন অনেকেই।

ভোটের দিনে পিঠে পড়েছিল রডের বাড়ি। ভোট না দিয়েই ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। তারপর থেকেই পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা। সকালেই পিঠের ব্যথা নিয়েই মানিকদ্বীপা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন বাদল লোহার। ভোট দিয়ে হাসিমুখে বেরিয়ে মাঝবয়সী বাদল জামা খুলে পিঠ খুলে দেখিয়ে বললেন, ‘‘হঠাৎ করে সে দিন একদল লোক লাঠিসোটা, লোহার রড নিয়ে বাইকে করে এসে তাণ্ডব চালিয়ে পালাল। কতজনকে যে মারল!’’

সোমবার ভোট দিতে এসে ফিরে গিয়েছিলেন সূর্যমণি হাঁসদাও। বুধবার তাই সাতসকালে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন সূর্যমণি। গোয়ালতোড়ের বর্গিউতরা প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে বুধবার ভোট হল কড়া পুলিশি প্রহরার মধ্যে। সোমবার এই বুথেই ব্যালট বাক্স ভেঙে, ব্যালট পেপার ছিঁড়ে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। সে দিন ভোট দিতে এসেও প্রাণভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন কয়েকশো ভোটার। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ভোট। বুধবার জঙ্গলাকীর্ণ সেই বুথে ফের ভোট হল কড়া নিরাপত্তায়। ভোট দিয়ে একটু জিরিয়ে সূর্যমণি বললেন, ‘‘সে দিন পুলিশ গুলান কী করছিল। এত পুলিশ তো সে দিনই দিতে পারত।’’

এ দিন গোয়ালতোড়ের ছ'টি বুথে ছিল কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী। বন্দুকধারী ও লাঠিধারী পুলিশ, ইএফআর জওয়ানের পাশাপাশি ছিল অনেক সিভিক ভলান্টিয়ারও। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল পিয়াশালা, বর্গিউতরা, মানিকদ্বীপা, নগদিপাড়া, গাছ উপড়ার মতো বুথ।

সোমবার কেনও এত নিরাপত্তা ছিল না, প্রশ্ন তুললেন অনেক ভোটারই। আগের দিন মানিকদ্বীপা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোট দিতে এসে ‘তাণ্ডব’ দেখে ছুটে পালিয়ে গিয়েছিলেন মিতালি দাস, পূর্ণিমা রুইদাসরা। বুধবার তাঁরা ভোট দিয়ে বুথের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘সে দিন আজকের মতো বেশি পুলিশ থাকলে অশান্তি হত না।’’

পিয়াশালা প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে সোমবার ব্যালট বাক্স বাইরে ফেলে ব্যালট পেপার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সামনে থেকে এই সব ঘটনা দেখেছিলেন বলে দাবি

চাঁপা দুলের।

বুধবার এই বুথ থেকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে তাঁর উপলব্ধি, ‘‘বেশি পুলিশ দিয়েই যেন প্রতিবারে ভোট হয়, না হলে সোমবারের মতোই হবে।’’ নগদিপাড়া বুথে সোমবার বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার ওই বুথে ভোট দিতে এসে রামশঙ্কর দে, সুমনা ঘোষরা বলছিলেন, ‘‘ভোটে যেন এরকমই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।’’ একই ছবি দেখা গেল

মেটালা বুথেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE