বদলি হলেন মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার আইসি সুশান্ত রাজবংশী। সুশান্তবাবু জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের তরফে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার আইসি-র বদলির নির্দেশ জারি হয়। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, শীঘ্রই নির্দেশ কার্যকর হয়ে যাবে। ঘটনায় পুলিশ মহলে শোরগোলও পড়েছে। নানা জল্পনা দেখা দিয়েছে। রাজ্য পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, এটি রুটিন বদলি।
সপ্তাহ কয়েক ধরেই একের পর এক পুলিশ কর্তা বদলি হচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। বেশির ভাগই জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন। নতুন সংযোজন মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার আইসি সুশান্তবাবুর বদলি। সুশান্তবাবু দীর্ঘদিন মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় ছিলেন। মাঝে একবার তাঁর বদলি হয়েছিল। ফের ফিরে এসেছেন মেদিনীপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে কোচবিহারের তুফানগঞ্জের কোর্ট ইন্সপেক্টর করা হয়েছে তাঁকে। একের পর এক বদলিতে কয়েকজন পুলিশ কর্তা-কর্মী শঙ্কিত বলে পুলিশমহলের এক সূত্রে খবর। যে কোনও মুহূর্তে কোপ পড়তে পারে ভেবেই তাঁরা না কি শঙ্কিত। ঘনিষ্ঠমহলে কয়েকজন পুলিশ কর্তা-কর্মী সেই আশঙ্কার কথা প্রকাশও করেছেন। পরিস্থিতি বুঝে ভারতী ‘ঘনিষ্ঠতা’কে দূরে সরিয়ে রাখার বার্তা দিতে শুরু করেছেন তাঁরা। যদিও এতে কতটা বরফ গলবে সেই নিয়ে সন্দিহান পুলিশের একাংশই।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পরই গড়বেতার ওসি হীরক বিশ্বাসকে মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করেছিলেন অলোক রাজোরিয়া। হীরকবাবু ভারতী ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন। এরপরে দীর্ঘদিন খড়্গপুরের এসডিপিও থাকা সন্তোষ মণ্ডলেরও বদলি হয় উত্তরবঙ্গে। বদলির আগে সন্তোষবাবু ঝাড়গ্রামের ডিএসপি (ডিইবি) ছিলেন। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির ডিএসপি (সার্কিট বেঞ্চ) করা হয় তাঁকে। একদিন আগেই জেলার আরও দুই পুলিশকর্তার বদলি হয়েছে। জেলার ডিএসপি (অপারেশন) ছিলেন অতীশ বিশ্বাস। অতীশবাবুর বদলি হয়েছে মালদহে। তিনি মালদহের ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) হয়েছেন। অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিএসপি (ট্রাফিক) ছিলেন লাল্টু হালদার। লাল্টুবাবুর বদলি হয়েছে মুর্শিদাবাদে। তিনি মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের এসডিপিও হয়েছেন। এর আগে একাধিক থানায় রদবদল হয়েছে। খড়্গপুরের (লোকাল) ওসি-র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রাজশেখর পাইনকে। রাজশেখরবাবু দীর্ঘদিন খড়্গপুরের (লোকাল) ওসি ছিলেন। তাঁর বদলি হয়েছে মোহনপুর থানায়। সবংয়ের ওসি ছিলেন বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বরঞ্জনবাবু খড়্গপুরের (লোকাল) ওসি হয়েছেন। সবংয়ের ওসি হয়েছেন অমিত অধিকারী।
গত সপ্তাহে মেদিনীপুরে এসেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিত্ করপুরকায়স্থ। ডিজি-র বৈঠকে ভারতী-প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। প্রসঙ্গটি উহ্যই থেকেছে। প্রসঙ্গ উহ্য রেখেই যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারতী-ছায়া আর থাকবে না। একাধিক ওসি, একাধিক ডিএসপি, এক আইসি-একের পর এক পুলিশ কর্তার বদলির পরে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ভারতী-ছায়া প্রায় মুছে গেল বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy