অনুশীলন: কেশপুরে চলছে ট্রেনিং। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে অফিসার, কর্মীর বহু পদ শূন্য। এতদিন ট্রাফিক সামলাতে ভরসা ছিলেন হোমগার্ড আর এনভিএফরা। এ বার সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও রাস্তায় নামানো হচ্ছে। সেই মতো সিভিক ভলান্টিয়ারদের ট্রাফিকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, থানাপিছু বেশ কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে বাছাই করে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের মতে, “এর ফলে ট্রাফিকের পরিকাঠামো আরও জোরদার হবে। পরিকাঠামো জোরদার হলে নিশ্চিত ভাবেই পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় ট্রাফিকের পরিকাঠামো অপ্রতুল বলে অভিযোগ। নিয়োগ না হওয়ায় অফিসার, কর্মীর বহু পদ শূন্য। পুলিশের এক সূত্রে খবর, জেলায় ট্রাফিকের এসআইয়ের বেশিরভাগ পদই শূন্য। এএসআইয়েরও কয়েকটি পদেও লোক নেই। কয়েক বছর আগে এনভিএফে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, পরিস্থিতি দেখে তাঁদের একাংশকে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক সময় ৫৫ জন হোমগার্ড এবং ৪৫ জন এনভিএফ-কে ট্রাফিকের কাজে যুক্ত করা হয়েছিল। পরে মেদিনীপুর, খড়্গপুরের মতো শহরে সব মিলিয়ে আরও ১০০ জন এনভিএফ-কে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন অন্তত শহর ও শহরতলির গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এক-দু’জন এনভিএফের দেখা মেলে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ট্রাফিকের দু’টি ইউনিট— একটি মেদিনীপুরে, অন্যটি খড়্গপুরে। দুই শহরেই ট্রাফিকের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই বলে অভিযোগ। নজরদারির অভাবে শহর-শহরতলিতে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে। জবরদখলের জেরে সঙ্কীর্ণ রাস্তায় হামেশাই দুর্ঘটনাও হয়। জেলার থানাগুলোয় এখন ভাল সংখ্যক সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে। পরিস্থিতি দেখে একাংশ সিভিককে ট্রাফিকের কাজে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
২০১৪ সালে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করেছিল রাজ্য। পুলিশের এক সূত্রে খবর, জেলায় নথিভুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যা ৫,৮৯৮। এর মধ্যে অবশ্য ১০২ জন কাজে যুক্ত হননি। এই সময়ের মধ্যে ১৬ জন সিভিক ভলান্টিয়ার মারা গিয়েছেন, ৫৩ জন অন্য কাজে যুক্ত হয়েছেন। নানা গুরুতর অভিযোগে ১৫ জনকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, থানাপিছু গড়ে দু’শোর বেশি সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন। মূলত এলাকায় নজরদারি চালানো, ভিড় সামলানোর মতো কাজ করতে হয় সিভিক ভলান্টিয়ারদের। এ বার যান নিয়ন্ত্রণের কাজও করবেন তাঁরা। সেই মতো বিভিন্ন থানা এলাকায় শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণে পথ নিরাপত্তার পাঠও দেওয়া হচ্ছে সিভিকদের। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “যান নিয়ন্ত্রণের কাজ যে সিভিক এই প্রথম করবে তা নয়। তবে ট্রাফিকের এমন প্রশিক্ষণ এই প্রথম। হোমগার্ড-এনভিএফদের যে ভাবে ট্রাফিকের কাজে লাগানো হয়েছে, এ বার একাংশ সিভিককেও সেই ভাবে ট্রাফিকের কাজে লাগানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy