Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ডেঙ্গি যেন না হয়, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এলাকাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া যাতে না হয় তা দেখতে হবে।”

কড়া: মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেলেন নারাযণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

কড়া: মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেলেন নারাযণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০০:২৯
Share: Save:

মাসখানেক আগেই জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়েছিল। রেলশহরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো বেগ পেতে হয় স্বাস্থ্য দফতরকে। ফের মশাবাহিত এই রোগ নিয়ন্ত্রণে সব এলাকা নিয়মিত সাফাইয়ের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহর সাজানোর কথাও বলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এলাকাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া যাতে না হয় তা দেখতে হবে।” মেদিনীপুর, খড়্গপুর- দুই শহরের পরিষেবা, পরিস্থিতি সম্পর্কেই বৈঠকে খোঁজ নেন মমতা। জানতে চান, সাফাই কেমন হয়, আলো জ্বলে কি না, সৌন্দর্যায়নের কাজ হচ্ছে কি না, পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে কি না প্রভৃতি।

বৈঠকের শুরুতে মুখ্যসচিব মলয় দে জানতে চান, মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে জেলা কী করেছে? জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা জানান, জেলা জুড়ে সচেতনতা কর্মসূচি হয়েছে। মশা মারার ধোঁয়া ছড়ানো হয়েছে। দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। মুখ্যসচিবের নির্দেশ, “এই সব রোগ নিয়ন্ত্রণে বছরের প্রথম থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।” জেলাশাসকের দাবি, “জেলা সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। আমরা অনেক কাজ করেছি। গ্রাম পঞ্চায়েতস্তর পর্যন্ত বৈঠক হয়েছে।” তাঁর আশ্বাস, “আশা করি, এ বার কোনও ঘটনা ঘটবে না।”

মুখ্যসচিব বলেন, “গত বছর খড়্গপুরে কিছু সমস্যা ছিল তো?” জেলাশাসকের জবাব, “রেল এলাকায় কিছু সমস্যা ছিল।” এরপরই মুখ্যসচিবের নির্দেশ, “আমরা কলকাতায় দেখেছি, কেন্দ্রীয় সরকারের বড় বড় দফতরের ক্যাম্পাস থাকে। নিজেরা পরিষ্কার করে না। কাউকে করতেও দেয় না। সব ক্যাম্পাস পরিষ্কার করতে হবে। খড়্গপুরে রেল, ডিফেন্স, আইআইটি রয়েছে। সবাইকে নিয়ে জেলাস্তরে একটা কমিটি করতে হবে।”

মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে সাজানো হয়েছিল মেদিনীপুর শহর। তা চোখে পড়েছে মমতারও। বৈঠকে মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসুর উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজ তো আমি দেখলাম শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আছে। এ ভাবে সবদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে?” পুরপ্রধান জানান, শহরে সাফাই কর্মীর সমস্যা নেই। সব দিনই পরিষ্কার করা হয়। মমতার প্রশ্ন, “মেদিনীপুর শহরে পরিষ্কার করার কাজ, আলো লাগানো, গাছ পোঁতা এগুলো কি করেন ঠিক মতো?” প্রণববাবুর জবাব, “ঠিক মতোই করি।”

মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “মেদিনীপুর- খড়্গপুর দু’টি শহরের কথাই আমি বলছি। এ সব কাজ দুই শহরেই ভাল ভাবে করতে হবে।” তাঁর সংযোজন, “মেদিনীপুরে ফুটপাথ করতে বলেছিলাম। হয়েছে দেখলাম। এরফলে ধুলোটা একটু কমে গিয়েছে। খড়্গপুরেও ফুটপাথ করতে হবে। ফুটপাথগুলো যাতে মানুষের চলাফেরার জন্য চালু থাকে, সেটাও নজরে রাখতে হবে।”

মেদিনীপুরে জলের সমস্যা মিটেছে কি না, আলোগুলো ঠিক মতো জ্বলে কি না, তাও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শহর ভাল করে সাজিয়ে রাখতে হবে। প্রদীপ তুমি ভাল করে সব দেখে নেবে।”

গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে সবচেয়ে খারাপ ডেঙ্গি-পরিস্থিতি তৈরি হয় খড়্গপুরে। আক্রান্তের বড় অংশই ছিলেন রেলশহরের বাসিন্দা। এ বারও সেই পরিস্থিতি হতে পারে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা অবশ্য জানিয়ে দিচ্ছেন, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে বছরভরই কর্মসূচি চলছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। এখন উদ্বেগের কিছুই নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE