Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মমতার মুখে রাধা-নাম

এই রাধাকান্তই গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ‘দলে উপেক্ষিত’ এই অভিযোগে গত ১০নভেম্বর মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।

দেবমাল্য বাগচী
ডেবরা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০০:২৫
Share: Save:

দল তাঁকে উপেক্ষা করছিল, এই দাবিতেই তৃণমূল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। তবে চার মাস পরে ‘ভুল’ বুঝতে পেরে পুরনো দলে ফিরেছেন ডেবরার প্রাক্তন বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি। ঘরে ফেরা সেই রাধাকান্তকেই বুধবার ডেবরায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক জনসভায় আগাগোড়া দেখা গেল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীও বক্তৃতা শুরুর আগে উচ্চারণ করলেন তাঁর নাম। সুষ্ঠুভাবে এই সভা আয়োজিত করার জন্য রাধাকান্তকে ধন্যবাদও জানালেন।

এই রাধাকান্তই গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ‘দলে উপেক্ষিত’ এই অভিযোগে গত ১০নভেম্বর মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।

গত ১৭ মার্চ ফের তিনি ফিরেছেন তৃণমূলে। ১৯ মার্চ মেদিনীপুরে তৃণমূলের তরফে তাঁকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে। তারপরে এ দিন ‘খাসতালুকে’ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় রাধাকান্তকে স্বমহিমায় দেখে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন- ‘তবে কি রাধার গুরুত্ব বাড়ল!’

জল্পনার কারণও রয়েছে। রাধাকান্তের বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের ব্লক কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা জেলা পরিষদ সদস্য বিবেক মুখোপাধ্যায় ও কোর কমিটির সদস্য তথা সাংসদ প্রতিনিধি অলোক আচার্য এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে উঠতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে থাকা তালিকায় নাম না থাকায় তাঁদের আটকানো হয়েছিল। পরে অবশ্য দলের শীর্ষ নেতাদের ফোন করে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি তাঁদের মঞ্চে ওঠার ব্যবস্থা করেন। অলোক বলেন, “আমি সভায় আসা বাসগুলি সামলাচ্ছিলাম। তাই শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তারক্ষীরা ঢুকতে বাধা দিয়েছিল। পরে তো সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।”

আর বিবেকের কথায়, “প্রথম আমাদের নাম ছিল না। কিন্তু পরে তো তালিকায় আমাদের নাম থাকায় নিরাপত্তারক্ষীরা মঞ্চে উঠতে দিয়েছে।” অজিতবাবুর বলেন, “রাধাকান্ত মাইতি প্রাক্তন বিধায়ক হিসাবে মঞ্চে ছিলেন। আর অলোক, বিবেকদের তো মঞ্চে ওঠার কথা নয়। তাই নাম ছিল না। আমি ফাইনাল তালিকায় ওঁদের নাম দেওয়ার পরে ওঁরা ঢুকেছেন।”

তবে কি সত্যি গুরুত্ব বাড়ল রাধাকান্তের? বিরোধী শিবিরের তরফে অলোক আচার্যের জবাব, “দেখলাম তো দিদি ওঁর নাম ধরে ডাকল, মঞ্চেও ছিল!” বিবেকের কটাক্ষ, “গুরুত্ব বাড়ল না কমল বলতে পারব না। ফলেন পরিচয়!”

রাধাকান্ত নিজে অবশ্য খুশি। সভা শেষে তিনি বলছেন, “দিদিকে জানিয়েছি যন্ত্রণা ছিল তাই দল ছেড়েছিলাম। দিদি সব শুনে বলেছেন, যন্ত্রণা কাটিয়ে চেয়ারে বসতে। এই সম্মানে আমি খুশি।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আগামী দিনে দলে কাজ পেলে বলব গুরুত্ব বেড়েছে। কিন্তু আজকের পরে উপেক্ষা কমেছে,
এ টুকু বলতে পারি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE