মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যটন বরাবরই তাঁর ভাবনায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে ফের বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একই সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন করে বোঝা যে তিনি নিতে চান না। তাই দলের জনপ্রতিনিধিদের নানা আব্দারে বারেবারেই মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “একলপ্তে সব কাজ করার মতো সরকারের অত টাকাও নেই আর লোকবলও নেই।”
পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া জেলার দর্শনীয় জায়গা গুলিকে নিয়ে ট্যুরিজম সার্কিট গড়ার কথা বলে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকটি এলাকায় পর্যটন দফতর ও প্রশাসনের উদ্যোগে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও শুরু হয়েছে। এ দিন কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের হেফাজতে থাকা কুরুমবেড়া দুর্গ এলাকাটির পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হলে ভাল হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে থামিয়ে দিয়ে জানান, জেলাশাসক বিষয়টি দেখে নেবেন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘কর্ণগড় ও গনগনির পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আমি বলে দিয়েছি।’’ গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীকেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নান্টি (আশিসবাবুর ডাক নাম) তোমার এলাকার গনগনি আমরা দেখে নিচ্ছি। শালবনির কর্ণগড়টাও দেখে নেওয়া হবে।”
কর্ণগড়ের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস থাকলেও রানি শিরোমণির পরিখা ঘেরা প্রাসাদটির কার্যত ভূতুড়ে দশা। সেখানে পৌঁছনোর উপযুক্ত রাস্তাও নেই। ষোড়শ শতকে পারাং নদীর কুল ঘেঁষা টিলার উপর সেই প্রাসাদে বাস করতেন রানি শিরোমণি। ইতিহাসে যিনি চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী। গড়বেতার গনগনি এলাকাটিকে বাংলার ‘গ্রান্ড ক্যানিয়ন’ বলা হয়। কিন্তু সেখানেও পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। মেদিনীপুরের লোকসংস্কৃতি গবেষক মধুপ দে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দু’টি জায়গায় দৃষ্টি দেওয়ায় আমরা আন্তরিক ভাবে খুশি।” মেদিনীপুরের মন্দিরময় পাথরা এলাকাটির সৌন্দর্যায়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে পর্যটন দফতর। পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক ইয়াসিন পাঠান বলেন, “পাথরার উন্নয়নের জন্য সরকারি স্তরে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কবে কাজ শুরু হবে, সেই অপেক্ষায় আছি।”
পর্যটনে বরাবরই জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রয়েছে তহবিল সঙ্কট। একই সঙ্গে মমতা এড়াতে চান প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দায়ও। তাই নয়া প্রকল্প হাতে না নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জোর পুরনো প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy