ছাড়পত্র মিলেছিল বছর দু’য়েক আগে। কিন্তু মঞ্জুর টাকা। তাই শুরু করা যায়নি কাজও। আজ, শুক্রবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আলোচনা এবং এলাকা পরিদর্শনে আসছেন ‘গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশন’-এর চেয়ারম্যান একে সিংহ ও পদস্থ আধিকারিকরা।
এখনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। তবু এলাকা পরিদর্শনের খবর চাউর হতেই খুশি ঘাটালবাসী। তাঁদের আশা, খোদ চেয়ারম্যান ঘাটাল ঘুরে গিয়ে দিল্লিতে রিপোর্ট জমা দেবেন। ফলে এ বার নিশ্চিত কিছু একটা হবেই।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ডিপিআর ছাড়পত্র দেয় জিএফসি (গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশন) পূর্বাঞ্চল শাখা। ওই বছরই ১৯ মে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের টেকনিক্যাল কমিটির সবুজ সঙ্কেতও মেলে। কেন্দ্রীয় অর্থ দফতরে জমা পড়ে প্রয়োজনীয় ফাইল।
কিন্তু দু’বছর পরেও শিকে ছেঁড়েনি ঘাটালের ভাগ্যে। বরাদ্দ হয়নি এক টাকাও। ইতিমধ্যে প্রকল্প ব্যায় বেশ কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। বদলেছে ভৌগোলিক পরিবেশও। ফলে চলতি বছরের জুন মাসে জিএফসি ফের সেচ দফতরের কাছে বেশ কিছু ব্যাখ্যা চায়। জুলাই মাসেই সেচ দফতর সমস্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখতেই ঘাটাল পরিদর্শনে আসছেন সংস্থার চেয়ারম্যান।
শুক্রবার সেচ দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন জিএফসি-র চেয়ারম্যান। ঘাটাল মহকুমা সেচ আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, “মূলত মাস্টার প্ল্যান নিয়েই আলোচনা হবে। যে সমস্ত তথ্য আমরা জমা দিয়েছি তা খতিয়ে দেখবেন চেয়ারম্যান।” পাশাপাশি নদী ও খাল থেকে বালি তোলার পর কোথায় ফেলা হবে সে জন্য উপযুক্ত জমি দেখবেন বলে খবর। ঘাটাল ব্লকের বহু গ্রামের পরিস্থিতিও দেখবেন একে সিংহ।
ঘাটালে বন্যা একটি পুরনো সমস্যা। এলাকার উন্নয়ন হলেও পরিস্থিতি বদলায়নি।
বন্যা প্রতিরোধে ১৯৫৯ সালে মান সিংহ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রথম ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়। ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ১৯৮২ সালে ঘাটাল শহরে শিলাবতী নদীর ধারে রুপোর কোদাল দিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের সূচনা হয়। তখন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ৫০ কোটি টাকা। প্রাথমিক ভাবে ৩০ লক্ষ বরাদ্দও হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
ফের ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ একটি সংস্থা মাস্টার প্ল্যানের জন্য ডিপিআর তৈরির কাজ শুরু করে। তাতে ১৭৪০ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যায় ধরা হয়। ২০১০ সালে ১৪ জানুযারি বিহারের পটনায় জিএফসির সদর দফতরে প্রথম ডিপিআর জমা পড়ে। কিন্তু তাতে ত্রুটি ছিল বলে অভিযোগ। তারপর সাত বছর টানাপড়েনের পর ২০১৫ সালের মে মাসে প্রথম দফার প্রকল্পটি ছাড়পত্র দেয় জিএফসি। প্রথম পর্যায়ে ১২১৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা মঞ্জুরের জন্য সুপারিশও করা হয়। দু’বছর পর প্রকল্প ব্যায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪০ কোটি টাকা।
প্রকল্পের সফল রূপায়ণ হলে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, ঘাটাল, দাসপুর-১ ও ২, চন্দ্রকোনা-১ ও ২, মেদিনীপুর, খড়্গপুর-১ ও ২, কেশপুর ও ডেবরা ব্লকগুলির বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “আমরা কমিশনের চেয়ারম্যানকে দ্রুত টাকা বরাদ্দ করে কাজ শুরুর দাবি জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy