নির্মাণ: ঘাটালে তৈরি হচ্ছে নতুন ভবন। নিজস্ব চিত্র
গরম হোক বা ঠান্ডা, এতদিন রাতে খোলা আকাশের নীচেই কাটাতে হত রোগীর আত্মীয়দের। কষ্ট হলেও ছিল না উপায়। ভোগান্তি কমাতে এ বার রোগীর আত্মীয়দের রাত্রিকালীন থাকার জায়গা বা নৈশাবাস চালু হচ্ছে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য দফতরের আর্থিক সহযোগিতায় এক কোটি দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পূর্ত দফতর নৈশাবাসটি তৈরি করেছে। রাজ্যের মধ্যে প্রথম ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেই এটি চালু হবে বলে দাবি। নৈশাবাসে থাকার জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট পরিচয় পত্রের মাধ্যমেই মিলবে নৈশাবাসে থাকার ছাড়পত্র। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বললেন, “বর্ষার আগেই নৈশবাসটি চালু করে দেব।” পূর্ত দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নির্বাহী প্রদীপ বাস্তুকার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নৈশাবাসের কাজ শেষ। এ বার প্লাস্টার ও রঙের কাজ শুরু হচ্ছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ঘাটালে মহকুমা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৪৫০টি শয্যা রয়েছে। ঘাটাল হাসপাতালে বরাবরই রোগীর চাপ বেশি থাকে। এমনকী মাঝে মধ্যে শয্যা না পেয়ে মেঝেতেও থাকতে হয় রোগীদের। শুধু ঘাটাল মহকুমা নয়, হাসপাতালের উপর দুই মেদিনীপুরের একাধিক ব্লক এবং হাওড়া ও হুগলির চার-পাঁচটি ব্লকের মানুষও নির্ভরশীল। সুপার স্পেশ্যালাটি হাসপাতালটি চালু হওয়ার পর রোগীর চাপ আরও বেড়েছে। তবে এতদিন হাসপাতালে চত্বরে রোগীর আত্মীয়দের বিশ্রামের জায়গা কিংবা রাতে থাকার ব্যবস্থা ছিল না। যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো অথবা গাছ তলায় বসে রাত কাটানোই ছিল দস্তুর। এর জেরে সমস্যার মধ্যেই রাত কাটাতে হচ্ছিল রোগীর পরিজনেদের।
হাসপাতালের কাছাকাছি রাতে থাকার কোনও বাড়ি বা লজও নেই। ভুক্তভোগীরা তাই রাতে থাকার জন্য ‘নাইট শেল্টার’ তৈরির দাবি করছিলেন। আন্দোলনও হয়েছে বহুবার।
তারপরই টনক নড়ে প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তপক্ষের। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত আর্থিক বছরই বরাদ্দ হয় টাকা। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ত দফতরকে।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের নিজস্ব জমিতেই তৈরি হয়েছে ‘পেসেন্ট পার্টি নাইট শেল্টার’। তিনতলা ফ্ল্যাটের গ্রাউন্ড ফ্লোরে রোগীর বাড়ির আত্মীয়েরা দিনের বেলায় বিশ্রাম নেবেন। শতাধিক চেয়ারও থাকবে। চলবে পাখাও। দোতলা ও তিনতলায় মোট ছ’টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। এক একটি ঘরে ৫০ জন করে থাকতে পারবেন। মহিলাদের জন্য থাকবে আলাদা থাকার ব্যবস্থা। লোডশেডিং হলে থাকবে জেনারেটরের সুবিধাও।
এ বার নৈশাবাস চালু হতে চলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন রোগীর পরিজনেরা। এক রোগীর পরিজনের কথায়, “যাক আর অন্তত গাছের তলায় রাত কাটাতে হবে না, এটাই স্বস্তি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy