দুর্গাপুজোর মধ্যেই দুই কিশোরী পালিয়ে গিয়েছে মেদিনীপুরের সরকারি হোম থেকে। এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি। বারবার আবাসিক পালানোর ঘটনায় মেদিনীপুরের রাঙামাটির এই হোম ‘বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন’-এর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে হোমের পরিবেশও। কেন বারবার হোম-পালানোর ঘটনা ঘটছে? গলদ ঠিক কোথায়? সদুত্তর মেলেনি হোম সুপার সুস্থিতি তিওয়ারির কাছে। তাঁর মন্তব্য, “আমি কিছু বলব না।’’ যদিও হোমের এক কর্মী মানছেন, “ফাঁক তো কোথাও না কোথাও রয়েছে। না হলে বারবার এমন ঘটনা ঘটত না।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তারও আশ্বাস, “কেন হোমছুটের ঘটনা ঘটছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তে পুলিশ সব দিকই খতিয়ে দেখছে।’’
২৮ সেপ্টেম্বর, মহাষ্টমীর সকালে দুই আবাসিক পালানোর বিষয়টি সকলের নজরে আসে। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সব থানা এবং রেল স্টেশনগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রক্ষীদের নজর এড়িয়ে দুই কিশোরী প্রথমে একটি গাছে ওঠে। তারপর সেই গাছের ডাল ধরে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একমাত্র এই সরকারি হোম থেকে আগেও বেশ ক’বার আবাসিক পালানোর ঘটনা ঘটেছে। ২০০৯ সালে দু’দফায় মোট ৯ জন তরুণী পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১০ সালের শুরুর দিকে মোট ১৬ জন তরুণী পালিয়ে গিয়েছিল। এদের কয়েকজন অবশ্য পরে উদ্ধার হয়।
সরকারি এই হোমের অব্যবস্থা নিয়ে মাঝেমধ্যেই নানা অভিযোগ ওঠে। কখনও কখনও আবাসিকদের পরিজনেরাই নালিশ করেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আবাসিকদের থাকতে হয়, মশারি মেলে না, জামাকাপড় অপরিচ্ছন্ন ইত্যাদি। খাবারদাবারের মান নিয়েও অভিযোগ ওঠে। মেদিনীপুরের হোম থেকে বারবার আবাসিক পালানোর ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়েই সব থেকে বড় প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এখানে সব সময় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকে।
বিভিন্ন মহলের মতে, কেউ কেউ হোমের বদ্ধ পরিবেশ মেনে নিতে পারে না। তা ছাড়া, হোমের হতশ্রী চেহারা এবং কর্মীদের আন্তরিকতার ঘাটতির কারণে আবাসিকদের মধ্যে পালানোর প্রবণতা বাড়ে। পরিস্থিতি বদলাতে ভাল ভাবে হোম চালানোর ইচ্ছে ও সহমর্মিতা চাই। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “হোমগুলোর দিকে নজর থাকেই। এ বার আরও বেশি নজর দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy