দিদির সঙ্গে তৃষিত। নিজস্ব চিত্র
মাত্র চার মাস বয়সেই থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের খঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা তৃষিত জানার। কলকাতা, ভেলোর ও মুম্বইয়ের নানা হাসপাতালে ঘোরার পরে ২০১৫ থেকে দিল্লির এইমসে তার চিকিৎসা চলছে।
তৃষিতের বয়স এখন সাড়ে সাত বছর। দিল্লির এইমসের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তৃষিতের ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট’ করতে হবে। তার জন্য খরচ প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা। তৃষিতের বাবা তাপসবাবু কাঁথির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত এক আবাসিক হোমের সুপার। মা স্বর্ণালীদেবী একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁরা ভেঙে পড়েননি।
বিপুল অর্থ জোগাড়ের জন্য তাপসবাবু প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের আরোগ্যনিধি প্রকল্পে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন জানান। এছাড়াও নিজের শুভানুধ্যায়ী অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বলাইকিশোর সামন্তের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানান তিনি। বলাইকিশোরবাবু কোলাঘাটের রাইন গ্রামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার। বিষয়টি জেনে যে যেখানে পড়াতেন সেই বাগনান কলেজের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তাঁর চেষ্টা ব্যর্থ হয়নি। তিনি ও তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের দেওয়া অর্থ মিলিয়ে উঠে গিয়েছে ৬ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা।
বুধবার কোলাঘাটের রাইন গ্রামে বলাইকিশোরবাবুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সংগৃহিত অর্থ তাপসবাবুর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। তিনি বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ অন্যদের অনুপ্রেরণা দেবে।’’
তাপসবাবু জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় আরোগ্য নিধি যোজনা থেকে তিনি ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ লক্ষ টাকা সাহায্য পেয়েছেন। বলাইকিশোরবাবু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় বাকি টাকার অনেকটাও জোগাড় হয়ে গিয়েছে। ছেলেকে নিয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লি রওনা হবেন তাপসবাবু। তাঁর আশা, ‘‘সবার আর্শীবাদে সেরে উঠবে তৃষিত।’’
বলাইকিশোরবাবুর কথায়, ‘‘ওই ছোট্ট শিশুর চিকিৎসার কথা শুনে আমার কলেজের যেসব প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী এখন জীবনে প্রতিষ্ঠিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওদের সাহায্য ছাড়া আমি হয়তো কিছুই করতে পারতাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy