ঘটনাস্থলে: তোলা হচ্ছে আবগারি দফতরের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
অভিযানে গিয়ে এক চোলাই মদের কারবারিকে পাকড়াও করেছিলেন আবগারি কর্তারা। তবে ফেরার পথে হামলার মুখে পড়তে হল তাঁদের। আবগারি দফতরের আধিকারিক-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে আটক চোলাই ভাটির মালিককে ছিনিয়ে নিয়ে চলে গেল এলাকার অন্য চোলাই কারবারিরা।
বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগড়ের বড়কলঙ্কাই গ্রামে। ওই গ্রামে চোলাই ভাটি চলছে বলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এ দিন ভোরে অভিযানে গিয়েছিলেন আবগারি দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা। তারপর একটি ভাটিতে হানা দিয়ে চোলাই বাজেয়াপ্ত করে মালিক বাবলু বিশুইকে পাকড়াও করা হয়। তাকে গাড়িতে তুলে গ্রাম থেকে বেরনোর পথে বাধে বিপত্তি। প্রথমে কাদায় আটকে যায় চাকা। তখনই এলাকার অন্য চোলাই কারবারিরা আবগারি দফতরের গাড়ি ঘিরে ফেলে। তারপর দফতরের আধিকারিক-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে আটক চোলাই ভাটির মালিক বাবলুকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এই ঘটনায় নারায়ণগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আবগারি দফতর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই বড়কলঙ্কাই গ্রামে চোলাই কারবার চলছে। এলাকায় গজিয়ে উঠেছে একাধিক বেআইনি চোলাই ভাটি ও ঠেক। চোলাই তৈরির কাজে যুক্ত হয়ে পড়ছেন গ্রামের বহু মহিলাও। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছে এলাকার কমবয়সী তরুণ থেকে মধ্যবয়সী পুরুষেরা। এই চোলাই কারবারের রমরমায় এলাকার একাংশ বাসিন্দা ক্ষুব্ধ। কিন্তু প্রতিবাদ করলে বিপদ হতে পারে, এই আশঙ্কায় কেউ মুখ খুলতে চান না। এক গ্রামবাসীর কথায়, “চোখের সামনে চোলাই কারবার চলে। গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সব সময় তো পুলিশ বা আবগারি দফতরের লোকেরা আসে না।”
তবে গোপনে আবগারি দফতরকে কাছে চোলাই ভাটি চলার খবর পৌঁছেছিল। এ দিন ভোরে আবগারি দফতরের নারায়ণগড়ের সার্কেল অফিসে গ্রামের একটি ভাটিতে চোলাই তৈরির খবর যায়। সেই মতো আবগারি দফতরের নারায়ণগড় সার্কেলের ওসি তারক মাহাতো এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর ও চারজন কনস্টেবলকে নিয়ে বড়কলঙ্কাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তার পরে ওই ভাটিতে হানা দিয়ে ৪০লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করে চোলাই কারবারি বাবলু বিশুইকে আটক করে নারায়ণগড়ের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা।
গ্রাম থেকে বেরোনোর আগেই অবশ্য কাদা-মাটিতে গাড়ির চাকা আটকে যায়। আবগারি দফতরের অভিযোগ, সেই সময় প্রথমে ছুটে আসেন বাবলু বিশুইয়ের পরিবারের মহিলারা। সঙ্গে ছিল এলাকায় চোলাই কারবারি বলে পরিচিত শিবু সিংহ, ঝড়া মাহাতো, পার্থ দণ্ডপাটেরা। তারা সকলে আবগারি দফতরের গাড়ি ঘিরে ধরে বলে অভিযোগ। তারপর ওসি-সহ আবগারি কর্মীদের মারধর করে আটক বাবলুকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনায় জখম আবগারি দফতরের ছ’জন কর্মীকে নারায়ণগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে থানায় ওই চোলাই কারবারিদের নামে ঘটনার অভিযোগ জানায় আবগারি দফতর। তবে ঘটনার পরেই অভিযুক্তরা এলাকা থেকে পালিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। আবগারি দফতরের সুপার একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “চোলাই কারবারিদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন আমাদের কর্মীরা। পালিয়ে গিয়েছে আটক বাবলু বিশুই। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy