Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হুজুগ বাড়ছে কার্তিকেরও, পুরোহিত মেলা ভার

বহু কালের পুরনো রীতি। কিন্তু এ বার প্রযুক্তির যুগেও হিড়িকটা যেন একটু বেশিই, বিশেষত নবীন প্রজন্মের মধ্যে, জানান এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, এ বছর ঘাটাল শহরে কার্তিক ঠাকুর ফেলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছে

পুজো চলছে ক’দিন ধরেই। নিজস্ব চিত্র

পুজো চলছে ক’দিন ধরেই। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

প্রতি বছরই বেড়ে চলেছে পুজোর আনন্দ-উৎসব-উৎসাহ! পিছিয়ে থাকছে না কার্তিক পুজোও। সব পুজোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচুর সংখ্যায় কার্তিক পুজো হচ্ছে ঘাটাল শহরেও।

বহু কালের পুরনো রীতি। কিন্তু এ বার প্রযুক্তির যুগেও হিড়িকটা যেন একটু বেশিই, বিশেষত নবীন প্রজন্মের মধ্যে, জানান এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, এ বছর ঘাটাল শহরে কার্তিক ঠাকুর ফেলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। পুজোর প্রায় ১৫ দিন আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন বাড়িতে কার্তিক পৌঁছে যেতে শুরু করেছে। এমনকী, চাহিদা বাড়ায় পুরোহিতও মিলছে না অনেক পুজোর।

মূলত সন্তান কামনায় কার্তিক পুজোর চল রয়েছে গ্রামবাংলায়। সাধারণত দেখা যায়, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশিদের মধ্যেই কার্তিক ঠাকুর ফেলার চল রয়েছে।

জানা গিয়েছে, ঘাটালে সদ্য বিবাহিত বা একটি মাত্র সন্তান রয়েছে এমন বাড়ি বেছেই শহরের গোটা পঞ্চাশেক বাড়িতে কার্তিক ফেলে আসা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এক-এক জন পুরোহিত চার-পাঁচটি করে পুজোর বরাত পেয়ে গিয়েছেন। শহরের এক পুরোহিত বিল্টু রায়চৌধুরী বলেন, “এক রাতে তো দশটা পুজো করা যাবে না! ইতিমধ্যেই দু’তিনটে পুজোকে না করে দিয়েছি।” আড়গোড়ার এক পুরোহিত সঞ্জীব চক্রবর্তীর কথায়, “পুজোর এত বরাত আসছে, গ্রাম থেকেও কয়েক জন পুরোহিতকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছি। পুজো তো করতে হবে।”

বিগত কিছু দিন কয়েক ধরেই ঘাটাল শহরের পটুয়াপাড়াগুলিতে ভিড় জমেছে। দিন পনেরো আগে থেকই শুরু হয়ে যায় ঠাকুর কেনার হিড়িকও। শহরের এক প্রতিমা বিক্রেতা কার্তিক মণ্ডল বলেন,“যখন তখন ক্রেতারা আসছেন। দাম শুরু হয় ৭০ টাকা থেকে। সর্বাধিক ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কার্তিক মূর্তি।” আর এক প্রতিমা শিল্পী রামপদ পাখিরার কথায়, “আমি এ বার দেড়শোটি কার্তিক ঠাকুর তৈরি করেছিলাম। এখনও পর্যন্ত আশিটি মূর্তি বিক্রি হয়েছে। লক্ষ্মী প্রতিমাও এতগুলি বিক্রি হয়নি।”

দিন সাতেক আগে বিবেকানন্দ পল্লির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক স্বদেশ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে কে বা কারা কার্তিক ফেলে যায়। তিনি বলেন, “রাতে আচমকাই চকলেট বোম আর ঢাকের আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি ছেলের বন্ধুরা। দরজার সামনে কার্তিক ঠাকুর বসানো।” মাস কয়েক আগেই স্বদেশবাবুর ছেলে সুপ্রিয়র বিয়ে হয়। তাঁর বন্ধুরা জানান, সুপ্রিয়র সদ্য বিয়ে হয়েছে। তাই তার বাড়িতেই কার্তিক পুজোর ব্যবস্থা করেছেন বন্ধুরা। স্বদেশবাবু বলন, “পুজোর দিনটা সবাই একসঙ্গেই কাটাব।” একই ভাবে কুশপাতার সমর মণ্ডলের বাড়িতেও কার্তিক ঠাকুর পৌঁছে দিয়েছেন পড়শিরা। মাস ছয়েক আগেই সমরবাবুর ছেলে প্রীতমের বিয়ে হয়। সমরবাবু বলেন, “ঘুম থেকে উঠে ধূপের গন্ধ পেয়ে দরজা খুলতেই দেখি কার্তিক ঠাকুর।”

সব মিলিয়ে কার্তিক পুজোর উৎসবে এখন মাতোয়ারা গোটা শহরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

কার্তিক পুজো Kartik Pujo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE