আইআইটি-র শহর, রেলের শহর খড়্গপুর। তবে এখানে কাছেপিঠে বেড়ানোর তেমন কোনও জায়গা নেই। সেই খরা কাটাতে শহরের উপকন্ঠে কাঁসাই নদীর উপকূলে ইকো-পার্ক গড়ার সিদ্ধান্ত নিল খড়্গপুর পুরসভা।
পুরসভার গত বোর্ড মিটিংয়ে ইকো-পার্ক গড়ার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়ে গিয়েছে। খড়্গপুর গ্রামীণের কেশপালে হবে এই প্রকল্প। শুধু ইকোপার্ক নয়, ইকো-ট্যুরিজমের ঢঙে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যায়ন উপভোগের পাশাপাশি অতিথি নিবাসের ব্যবস্থাও করা হবে। কাঁসাইয়ের বুকে ওয়াটার রাইড চালু করা যায় কিনা, সে বিষয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।
গত ৩ জুন পুরসভার দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে কেশপালেই। জল প্রকল্প চালু হলেও এখনও কেশপাল থেকে ঝরিয়া পর্যন্ত শহরে জল আসছে পুরনো পাইপ লাইনে। কেশপাল থেকে ঝরিয়া পর্যন্ত নতুন আরও একটি পাইপলাইন করার কথা পুরসভা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জলশোধন প্রকল্প গড়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। সেই মতো ওই এলাকায় ইকো-পার্ক গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “কেশপালে জল প্রকল্প এলাকায় ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট’ ব্যবস্থা গড়ার সঙ্গে ইকো-পার্কও গড়ব। অ্যানিকেত বাঁধ হওয়ায় ওখানে সারাবছর জল থাকছে। তাই বিনোদনের জন্য পার্ক ছাড়াও নদীকে কেন্দ্র করে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।’’ এই প্রকল্প গড়ে উঠলে শহর ও সংলগ্ন এলাকার মানুষ কাঁসাইয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন বলেই আশা পুরপ্রধানের।
খড়্গপুরে আধুনিক বিনোদনের তেমন ব্যবস্থা নেই। নিউসেটলমেন্টে একটি শপিং মল থাকলেও সেখানে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়নি রেল। জেনারেটরের ভরসাতেই দোকান চলে। বছর দু’য়েক ধরে রেলের গেটবাজার এলাকায় গড়ে ওঠা সিনেপ্লেক্সেও বিভিন্ন পরিষেবা অমিল। শহরে অত্যাধুনিক পার্ক, ওয়াটার স্পোর্টস, বিলাসবহুল মাল্টিপ্লেক্সের অভাব রয়েছে। বাইরে থেকে কেউ এলে তাই হতাশ হন। আইআইটি-র ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা দু’দিনের জন্য এলেও কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন না। বহু বছর আগে বন দফতরের উদ্যোগে খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার প্রেমবাজারে ইকো-পার্ক গড়া হলেও তা জনপ্রিয় হয়নি। শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে কাঁসাইয়ের পাড়ে নতুন করে ইকো-পার্ক গড়ার তোড়জোড় হওয়ায় খড়্গপুরবাসী তাই উৎসাহিত। মালঞ্চর বাসিন্দা রেল আধিকারিক গৌরাঙ্গ প্রধান বলেন, “সত্যি বলতে বাড়িতে অতিথি এলে ধারেকাছে কোথাও ঘুরতে যাওয়া না। এটা আমাদের শহরের লজ্জা। কাঁসাইয়ের পাড়ে মনোরম পরিবেশে ইকো-পার্ক ও থাকার জায়গা হলে খুব খুশি হব।”
কেশপালের জল প্রকল্প এলাকায় সরকারি জমি রয়েছে। সেখানেই ইকো-পার্ক গড়ার পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। খড়্গপুর থেকে কেশপাল পর্যন্ত ভাল রাস্তা গড়ার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। পুরপ্রধান বলেন, “এটা আমার স্বপ্নের প্রকল্প। প্রয়োজনে কিছু জমি কিনতে হতে পারে। সব প্রক্রিয়া শেষ হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy