Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

টাকা না পেয়ে মাথায় মুগুর, মৃত্যু মহিলার

অভিযোগ, বচসা চলাকালীন গঙ্গাদেবীর মাথায় হঠাৎ কাঠের মুগুর দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁর চিৎকার শুনে স্থানীয়েরা ছুটে আসলে লক্ষ্ণণ পালানোর চেষ্টা করে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

ধারের টাকা ফেরত দেননি। সেই অভিযোগে এক মহিলার মাথায় কাঠের মুগুর দিয়ে আঘাত করে ব্যক্তি। রবিবার রাতে তমলুক জেলা হাসপাতালে মারা যান গঙ্গা ঘোড়ই (৩৫) নামে ওই মহিলা।

নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া এলাকার পঞ্চমখণ্ড জালপাই গ্রামের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত লক্ষ্মণ ভুঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বাড়ি গোপালচক গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গাদেবীর স্বামী চন্দন ঘোড়াই এবং লক্ষ্মণ পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাদে কয়েকমাস আগে লক্ষ্মণবাবুর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন গঙ্গাদেবী। তিনি গুজরাতের সুরাতে মেয়ে-জামাইয়ের কাছে থাকতেন। মাস খানেক আগে বাড়ি ফিরেছিলেন। সেই সময় ধারের টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে লক্ষ্মণের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে।

রবিবার বিকেলে গঙ্গাদেবী মুড়ি ভাজার জন্য চাল নিয়ে স্থানীয় মহম্মদপুর বাজারে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার সময় রাত ৮টা নাগাদ গঙ্গাদেবীর বাড়ির কাছেই তাঁর পথ আটকায় লক্ষ্মণ-সহ আর বেশ কয়েকজন। শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, বচসা চলাকালীন গঙ্গাদেবীর মাথায় হঠাৎ কাঠের মুগুর দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁর চিৎকার শুনে স্থানীয়েরা ছুটে আসলে লক্ষ্ণণ পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গ্রামবাসীরা তাকে ধরে ফেলে। পরে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে থেকে লক্ষ্মণকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করে।

গুরুতর আহত অবস্থায় গঙ্গাদেবীকে প্রথমে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ওই রাতেই তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু রাতেই মারা যান গঙ্গাদেবী।

গঙ্গাদেবীর স্বামী চন্দন বলেন, ‘‘ও বিকেলে বাড়ি থেকে চাল নিয়ে মুড়ি ভাজানোর জন্য বাজারে গিয়েছিল। রাতে বাড়ির কাছে চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি, রাস্তার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এলাকার লোকজন এসে লক্ষ্মণকে ধরে ফেলে।’’ চন্দনবাবুর কথায়, ‘‘লক্ষ্মণের কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকা ফেরত দিতে কিছুটা দেরি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তার জন্য ও আমার স্ত্রী’কে এভাবে মেরে ফেলবে ভাবতে পারিনি।’’

গঙ্গাদেবীর প্রতিবেশী শেফালি সামন্ত বলেন, ‘‘রাত ৮টা নাগাদ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে গিয়েছিলাম। কেন এমন ঘটল প্রথমে বুঝতে পারিনি।’’

নন্দীগ্রাম থানার ওসি অজয় মিশ্র গোটা ব্যাপারে বলেন, ‘‘৭০ হাজার টাকা বারবার ফেরত চেয়েও তা না পাওয়ায় লক্ষ্মণের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছিল। সেই বিরোধের জেরেই ওই মহিলাকে করা হয়েছে। জেরায় সে কথা লক্ষ্ণণ স্বীকারও করেছে। ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কি না তদন্ত করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE