Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
ফের শুরু বিশেষ অভিযান
Dengue

মশার লার্ভা মারতে পথে স্বাস্থ্যকর্তারা

নিম্নচাপের বৃষ্টিতে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেক আগেই চারশো ছুঁয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন নানা উদ্যোগ, কর্মসূচির কথা বললেও ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তে রাশ টানা যায়নি।

অভিযান: স্প্রে করা হচ্ছে মশা মারার তেল। রয়েছেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র

অভিযান: স্প্রে করা হচ্ছে মশা মারার তেল। রয়েছেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৪
Share: Save:

নিম্নচাপের বৃষ্টিতে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেক আগেই চারশো ছুঁয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন নানা উদ্যোগ, কর্মসূচির কথা বললেও ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তে রাশ টানা যায়নি। পরিস্থিতি দেখে তাই ফের বিশেষ অভিযান শুরু হল জেলায়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “মশাবাহিত রোগ দমনে অভিযান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার হাল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

সপ্তাহ কয়েক ধরে মশার উপদ্রব বাড়ায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই শুক্রবার থেকে এই অভিযান হচ্ছে। অভিযানে বেরনো স্বাস্থ্যকর্মীদের জেলা স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশ দিয়েছে— মশার লার্ভা মিললেই খবর দিন ব্লক কিংবা জেলায়। দ্রুত এলাকায় মশা মারার তেল স্প্রে করা হবে। ধ্বংস করা হবে মশার বংশবৃদ্ধির পথ। অভিযানে বেশ কিছু এলাকায় মশার লার্ভার দেখাও মিলেছে। মেদিনীপুর শহরে এলাকা পরিদর্শন হয়েছে। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা পতঙ্গবাহী রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান নিজে বার্জটাউনে গিয়েছিলেন। এলাকা পরিদর্শনের সময় জমা জলে মশার লার্ভা দেখতে পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবুও। সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় তেল স্প্রে করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবু মানছেন, “এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে কিছু জায়গায় জমা জল দেখতে পাওয়া গিয়েছে। লার্ভাও মিলেছে। সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় তেল স্প্রে করা হয়েছে। উদ্বেগের কিছু নেই।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু জানান, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে এক দিকে সচেতনতায় জোর দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে নিয়মিত মশা প্রতিরোধী ধোঁয়া এবং তেল ছড়ানো হচ্ছে। এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজও চলছে। পাশাপাশি চলছে পরিদর্শন। বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিদর্শনের রিপোর্টও জেলায় আসতে শুরু করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্র মানছে, জমা জলই বিপদ বাড়াচ্ছে। সকলে সমান সচেতন হলে এটা হত না। ওই সূত্রের বক্তব্য, দেখা গিয়েছে, কিছু এলাকায় একাধিক নির্মীয়মাণ বাড়িতে জমিয়ে রাখা জলে মশার লার্ভা কিলবিল করছে। কিছু এলাকায় চৌবাচ্চায় জল জমে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “একাধিকবার বলা সত্ত্বেও কয়েকটি এলাকায় সাফাই অভিযানের কাজ আশানুরূপ হয়নি। কেন হয়নি দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত বা পুর-কর্তৃপক্ষের কৈফিয়ত তলব করা হবে।”

জেলার ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন, এ দিন থেকে ফের এলাকায় এলাকায় মশার লার্ভা খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। কিছু এলাকায় টবের জলে, ডাবের খোলার জলে মশার লার্ভা কিলবিল করছে বলে দেখা গিয়েছে। তেল স্প্রে করা হয়েছে। তাঁর আরও সংযোজন, “জমা জল সরানো, মশার তেল স্প্রে করা, জঞ্জাল সাফ এখন রোজ চলবে।’’

শুক্রবার থেকে জেলায় যে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে তা চলবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত। এই ক’দিন এলাকায় এলাকায় ঘুরবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ফের ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযান হবে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার স্বীকারোক্তি, “বেশ কিছু এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। সব ব্লক এবং শহরকে পরিচ্ছন্নতার কাজ আরও নিবিড় ভাবে করতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE