Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
ভাঁড়ারে টান

জগন্নাথের রথ তৈরিতে এগিয়ে এলেন ওয়াসিমরা

খরচ বিশাল। আটকে যাচ্ছিল জগন্নাথ দেবের রথ তৈরির কাজ। সাহায্যে এগিয়ে এলেন এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা। চালু হয়েছে রথ তৈরির কাজ।

নির্মাণ: রথ তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র

নির্মাণ: রথ তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র

শান্তনু বেরা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০১:২৪
Share: Save:

খরচ বিশাল। আটকে যাচ্ছিল জগন্নাথ দেবের রথ তৈরির কাজ। সাহায্যে এগিয়ে এলেন এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা। চালু হয়েছে রথ তৈরির কাজ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামনগর ২ নম্বর ব্লকের ডেমুরিয়ার রথযাত্রার বয়স ৩০০ বছরের বেশি। সম্প্রতি জগন্নাথের মন্দির সংস্কার হয়েছে। তারপর রথযাত্রা পরিচালন কমিটি নতুন রথ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। পুরীর জগন্নাথ দেবের রথ তৈরি করেন মহারানা পরিবারের সদস্যেরা। কমিটি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু মহারানা পরিবার থেকে বলা হয়, একটি রথ তৈরি করা হলে তাঁরা বরাত নেবেন না। কারণ তাতে তাঁদের আর্থিক লাভ থাকবে না। তিনটি রথ তৈরি করানো হলে তাঁরা যেতে আগ্রহী। জগন্নাথের ২৫ ফুট, বলরামের ২৪ ফুট এবং সুভদ্রার ২৩ ফুট উচ্চতার রথ বানাতে ৩০ লক্ষ টাকা বাজেট দেওয়া হয়। এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয় বলেই কমিটি প্রথমে পিছিয়ে এসেছিল।

কিন্তু উৎসাহ জোগান এলাকার মুসলিমেরা। তাঁরা রথ তৈরির কাজ শুরু করতে বলেন। অনেকেই অর্থ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। কেউ চেকে বা কেউ নগদে অর্থ সাহায্য করেছেন। পুরীর মহারানা পরিবারের ২০ জনের একটি দল ডেমুরিয়ায় এসে রথ তৈরির কাজ শুরু করেছেন। অর্থ সংগ্রহ করতে রথযাত্রা কমিটির পক্ষ থেকে হ্যান্ডবিলও ছাপানো হয়েছিল। এ বিষয়ে ডেমুরিয়া রথযাত্রা পরিচালন কমিটির সম্পাদক তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, “সমাজের সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মুসলিমরাও এভাবে রথ গড়তে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় আমরা অভিভূত।’’ কমিটির সহ-সম্পাদক ওয়াসিম রহমান বলেন, “এখানে সম্প্রীতির এই বন্ধন আমরা কোনওদিন ভাঙতে দেব না। তাই রথ তৈরিতে আর্থিক সাহায্য এবং রথের মেলা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সব ধরনের সাহায্য করি।’’

মান্দারপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক নাসির আলি বলেন, “এই এলাকার জগন্নাথদেবের সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক। আমি টানা ১৫ বছর রথের মেলা পরিচালন কমিটিতে ছিলাম। জগন্নাথদেবের স্থায়ী রথ হবে। তাই সব রকম সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছি।’’ অন্যদিকে এলাকায় প্রতি বছর মান্দারপুরে ইদ উৎসব হয়। আবার মহরম উপলক্ষে মেলা হয়। সেই মেলা কমিটির সহ-সম্পাদক পদে রয়েছেন তমালবাবু। তিনি জানান, ডেমুরিয়া এলাকায় দুই সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির দৃঢ় বন্ধন দীর্ঘদিনের। বহু বছর থেকে এখানকার রথযাত্রায় অংশ নেন মুসলিম সম্প্রদায়। রথযাত্রার সময়ে সুভদ্রার রথের রশিতে টান দেন মুসলিম মহিলারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE